জানুয়ারি ২৪, ২০২৩, ০১:৫৯ এএম
পাঠ্যপুস্তকে ভুলের সমালোচকদের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেছেন, “কোনো ইস্যু না পেয়ে শেখ হাসিনা সরকারকে সরাতে নতুন শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকের উপরে ভর করার চেষ্টা করছেন। তাদের নিয়ে করুণা করা ছাড়া আর কিছু করার সাধ্য নাই। কারণ তারা যা বলছেন তা মিথ্যাচার। যে সকল ভুল এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে তা সংশোধন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে।”
নতুন বছরের পাঠ্যপুস্তকে বেশ কিছু ভুল নিয়ে গণমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই সোমবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন,শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পাশাপাশি দেশের সকল মানুষ পাঠ্যবই পড়ছেন এটা খুবই আনন্দের বিষয়। তারা আরও সূক্ষ্মভাবে বইগুলো পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা ও পরামর্শ করলে সমস্ত পরামর্শ বিবেচনা করা হবে। যেখানে যৌক্তিক হবে, সেখানে পরিমার্জন, পরিশোধন, পরিশীলন করা হবে। এটি আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি।
দীপুমনি বলেন, কেউ কেউ বই না পড়েই কেউ একজন বলেছে তা শুনে অপরাজনৈতিক হিংসা, বিদ্বেষ নিয়ে সমালোচনা শুরু করেছেন। তারা চায় যে এ সরকার না থাকুক। স্মার্ট বাংলাদেশ কি দরকার। তারা চায় পাকিস্তান। এরকম একটি গোষ্ঠী বলছে, নতুন বইয়ে ইসলাম নাই, যা আছে ওটা ইসলাম বিরোধী। আপনার আশপাশে ও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এর ওয়েবসাইটে বই আছে আপনি দেখে নিন। চিলে কান নিয়ে গেছে আপনি তার পিছে না ছুটে নিজে দেখুন।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, বইগুলো শিক্ষক, অভিভাবক-শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিয়ে করা হয়েছে। ৩৫ কোটি বই ছাপানোর একটি বিশাল কর্মযজ্ঞে মানুষ হিসেবে আমাদের ভুল হতে পারে। এছাড়া বিদ্যুতের সমস্যা ও কাগজের সংকট ছিল। প্রকাশকদের নিয়েও নানান ধরণের সমস্যা সমাধান করতে হয়েছে।
যেখানে ভুল থাকবে ধরা পড়লে সকল যৌক্তিক ভুল সংশোধন করা জানিয়ে দেশের প্রথম নারী শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যারা মিথ্যাচার করছেন তা মেনে নেয়া হবে না। পশ্চিমবঙ্গের বাতিল করা একটি বইয়ের বর্ণপরিচয় থাকা একটি পৃষ্ঠার সাথে আমার ছবি দিয়ে বলা হচ্ছে যে আমি পৌত্তলিকতা শিখাচ্ছি। সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে জীবনের হুমকি দেয়া হলে সেটি সামাজিকতা নয়।
নবম-দশম শ্রেণির বই নিয়ে যে বির্তক তা ১০ বছর পুরনো মন্তব্য করে দীপু মনি বলেন, দশ বছর পরে ধরা পড়েছে এই ভুলটি। দেশের একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ তিন দফায় সংশোধন করার পরও ভুল রয়ে গেছে। সেটি এবার সংশোধন করে দেয়া হয়েছে।
সামান্য সম্মানীর বিনিময়ে শিক্ষকরা দিনের পর দিন কষ্ট করে বইগুলো সম্পাদনা করে থাকে। বইগুলো নিয়ে কোনো মিথ্যাচার ও অপপ্রচার সহ্য করা হবে না বলে চাঁদপুর-৩ আসনের এই সংসদ সদস্য বলেন, যা যৌক্তিক, সঠিক আমরা তা নিশ্চয় গ্রহণ করব।
শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমকে দায়িত্বশীল সংবাদ প্রচার করার আহ্বান জানান।
রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ ফরহাদুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি।