রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনা ২১ বছর পেরিয়ে গেলেও মামলার নিষ্পত্তিতে এখন পর্যন্ত অনিশ্চয়তা কাটেনি।বোমা হামলা হত্যা মামলার রায় হলেও উচ্চ আদালতে তা প্রায় ৮ বছর ধরে বিচারাধীন। আর বিস্ফোরক আইনে দায়ের হওয়া মামলাটি বিচারিক আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।তবে রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, সব আশঙ্কা কাটিয়ে স্বল্প সময়ের মধ্যেই এ মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ হবে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে মামলাটি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন পর্যায়ে রয়েছে। গত ২১ মার্চ এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের মোট ৮৪ জনের মধ্যে । ৫৪ সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর গত ৩ এপ্রিল কারাগারে থাকা আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ ভূঁঞা গণমাধ্যমকে বলেন, “কোভিডসহ অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও মামলাটি বিচারের শেষ পর্যায়ে এসেছে। আশা করছি, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে দ্রুতই এ মামলার রায় হবে।”
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদও মামলার দুত নিষ্পত্তির পক্ষে কথা বলেছেন। তিনি গণমাধ্যেমে বলেন, “দীর্ঘদিন পর হলেও রমনা বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক মামলাটি শেষ পর্যায়ে এসেছে। আমরাও চাই, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে দ্রুত এ মামলার বিচারকাজ শেষ হোক।”
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের দিন সকালে রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে অনুষ্ঠানস্থলে আগে থেকে পুঁতে রাখা দু’টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে প্রথমটির বিস্ফোরণ ঘটানো হয় সকাল ৮টা ৫ মিনিটে। অন্যটির বিস্ফোরণ ঘটে সকাল সোয়া ১০টায়। বোমা হামলায় ঘটনাস্থলেই ৭ জনের মৃত্যু ও ২০-২৫ জন আহত হন। পরে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আরও তিনজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা করেন। দু’টি মামলার মধ্যে ২০১৪ সালের ২৩ জুন হত্যা মামলার রায় হয়অ ওই রায়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডা দেন আদালত।
তবে মামলার অন্যতম আসামি সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনসহ চার আসামি এখনো পলাতক। অন্য মামলায় মুফতি আব্দুল হান্নানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।