বাংলা একাডেমি পরিচালিত তিনটি সাহিত্য পুরস্কারের জন্য গবেষক রাজিয়া সুলতানা ও ইসরাইল খান এবং ছড়াকার সিরাজুল ফরিদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, আগামী ২৩ ডিসেম্বর একাডেমির সাধারণ পরিষদের ৪৫তম বার্ষিক সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ তিনটি পুরস্কার দেওয়া হবে।
সাহিত্যিক মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ প্রবন্ধসাহিত্য পুরস্কার ২০২২
সাহিত্যিক মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ প্রবন্ধসাহিত্য পুরস্কার ২০২২-এ ভূষিত হয়েছেন বিশিষ্ট গবেষক ড. রাজিয়া সুলতানা। এ পুরস্কারের অর্থমূল্য এক লাখ টাকা।
ড. রাজিয়া সুলতানা ১৯৩৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি 'মধ্যযুগের কবি আবদুল হাকিমের জীবন ও কর্ম' বিষয়ে গবেষণা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক রাজিয়া সুলতানা বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে প্রাচীন ও মধ্যযুগের পাণ্ডুলিপি ও সাহিত্য বিষয়ে পথিকৃৎ গবেষক।
তার রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নওয়াজিশ খান বিরচিত ‘গুলে বকাওলী কাব্য’ (সম্পাদনা), ‘আবদুল হাকিম: কবি ও কাব্য’, ‘আবদুল হাকিম রচনাবলি’ (সম্পাদনা), ‘কথাশিল্পী নজরুল’, ‘নজরুল অন্বেষা’, ‘সাহিত্য বীক্ষণ’, ‘প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলাভাষার অভিধান’ প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড (যুগ্মসম্পাদনা), ‘আলাওল রচনাবলি’ (যুগ্মসম্পাদনা)।
সা'দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২
সা'দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২-এ ভূষিত হয়েছেন বিশিষ্ট গবেষক ড. ইসরাইল খান। এ পুরস্কারের অর্থমূল্য পঞ্চশ হাজার টাকা।
ড. ইসরাইল খান ১৯৫৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের সাহিত্য সংস্কৃতি ও সমাজের অগ্রগতিতে সাময়িকপত্রের ভূমিকা (১৯৪৭-৭১) বিষয়ে গবেষণা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম সম্পাদিত ও প্রকাশিত সমায়িকপত্র বিষয়েও গবেষণা করেছেন। অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা ড. ইসরাইল খানের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ– ‘সাময়িকপত্র ও সমাজগঠন: বাংলাদেশের পরিস্থিতি’, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি ও ভাষা পরিস্থিতি’, ‘মোহাম্মদ লুৎফর রহমান: জীবন ও চিন্তাধারা’, ‘পূর্ববাংলার সাময়িকপত্র’, ‘বাংলা সাময়িকপত্র: পাকিস্তানপর্ব’, ‘পূর্ববাংলার সাময়িকপত্র: প্রগতিশীল ধারা’, ‘অদ্বৈত মল্লবর্মণ: জীবন ও কর্ম’ ।
কবীর চৌধুরী শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০২২
কবীর চৌধুরী শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০২২-এ ভূষিত হয়েছেন বিশিষ্ট ছড়াকার সিরাজুল ফরিদ। এ পুরস্কারের অর্থমূল্য এক লাখ টাকা।
সিরাজুল ফরিদ ১৯৪৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের ছড়ায় প্রতিবাদী ধারা সংযোজনে তার ভূমিকা অবিস্মরণীয়। দেশচেতনা, সমাজসাম্য ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ প্রস্ফুটিত হয়েছে তার ছড়ায়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সিরাজুল ফরিদ এবং তার সহযোদ্ধারা ‘এ লাশ আমরা রাখবো কোথায়’ শিরোনামে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত একটি সাহসী সংকলন প্রকাশ করেন।
আশির দশকে সামরিক শাসনের কবলে ছিন্নভিন্ন বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে সিরাজুল ফরিদ ছড়াযুদ্ধ চালিয়ে গেছেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ– ‘ছড়ায় ছড়ায় ছবি’, ‘শিশুদের পড়া আধুনিক ছড়া’, ‘বুকের ভেতরে আগুন’, ‘আম কাঁঠালের ছায়া’, ‘মেঘের ঠোঁটে রঙ লেগেছে’, ‘ছড়িয়ে দে আলোর ছটা’, ‘দুখু মিয়ার গল্প’।