সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪, ০৪:৩৫ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফাকে ইসলামবিদ্বেষী আখ্যা দিয়ে পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সমাবেশে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সামিনা লুৎফার বিরুদ্ধে উঠে আসা ইসলামবিদ্বেষের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।
শিক্ষার্থীরা মনে করেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা একজন শিক্ষককে এভাবে বিতর্কিত করা বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার পথে বাধা।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রায়হান আহমেদ বলেন, "ম্যাম কে কতিপয় গোষ্ঠী ধর্মবিদ্বেষী বা ইসলামবিদ্বেষী ট্যাগ দিয়ে উনার মানহানি করার চেষ্টা করছে। যার বিরুদ্ধে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। তার শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা জানি তিনি পাঠ্যপুস্তক সংস্কার কমিটিতে থাকার জন্য যোগ্য একজন মানুষ। বিভাজনের রাজনীতি করে এমন কিছু মানুষ তাকে ইসলামবিদ্বেষী ট্যাগ দেয়। আমরা ম্যাম কে যতটুকু চিনি উনি এমন কোনো মনোভাব পোষণ করেন না।"
তিনি যোগ করে বলেন, শুধু সমাজবিজ্ঞান বিভাগই নয়, অন্যান্য বিভাগের সমমনা শিক্ষার্থীরাও এই বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিয়েছে।
সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থী সীমা আক্তার বলেন, " ড. সামিনা ম্যামকে যখন ট্যাগ দিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়, তখন আমরা ট্যাগিং এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যে বাংলাদেশ পেলাম তাকে অস্বীকার করা হয়। ফ্যাসিস্ট সরকার অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করত এই ট্যাগিং।"
অধ্যাপক সামিনা লুৎফা ও কামরুল হাসানকে ইচ্ছাকৃতভাবে ট্যাগ দেয়া হয়েছে বলে মনে করেন কিছু শিক্ষার্থী।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি বলেন, "আমরা ফ্যাসিবাদী সরকারকে তাড়াতে পেরেছি বটে, কিন্তু ফ্যাসিবাদের যে উপাদান তা আমাদের সমাজে বলিষ্ঠভাবে বিদ্যমান।"
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস স্যারও ২০১২ সালে এলজিবিটিকিউ অধিকারের পক্ষে কথা বলেছিলেন অন্য দুই নোবেল ল্যরেট এর কাছে। অথচ উদ্দ্যেশ্য প্রনোদিতভাবে সামিনা লুৎফা ম্যাম ও কামরুল হাসান স্যার কে টার্গেট করা হলো।"
পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে থাকা দুইজন সদস্যকে ইসলামবিদ্বেষী বলে অভিহিত করে ধর্মীয় সংগঠনগুলি আপত্তি জানিয়েছিল। এই আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কমিটিকে ভেঙে দিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।