টিকা নিয়ে রাজনীতিতে তর্ক-তরজা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ২৬, ২০২১, ০৩:১৩ পিএম

টিকা নিয়ে রাজনীতিতে তর্ক-তরজা

করোনা মহামারির মধ্যেও ভ্যাকসিন নিয়ে তর্ক-তরজা চলছে দেশের রাজনীতিকদের মধ্যে। ভারত থেকে উপহার পাওয়া ও কেনা করোনা ভ্যাকসিন আসার পরই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মন্তব্যবাণ ছুড়তে দেখা যাচ্ছে। ভ্যাকসিনের প্রয়োগ নিয়েই মূলত দুই শিবির ওই বিসংবাদে জড়িয়েছে। রাজনীতির মাঠ হঠাৎ গরম হয়ে উঠেছে ভ্যাকসিন বিতর্কে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা যুদ্ধে স্বাস্থ্যকর্মীদেরই আগে ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত। ওদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে জনগণের সংশয় ও ভয়ভীতি কাটানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই আগে করোনার টিকা নেওয়া  উচিত। 

বিএনপি নেতার এমন মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন,বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের ডিমেনশিয়া রোগ হয়েছে কিনা, আমার সন্দেহ হচ্ছে।সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

বুধবার রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের এক নার্সকে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে দেশে শুরু হচ্ছে বহুল কাঙ্খিত করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রম। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারত থেকে আসা করোনা ভ্যাকসিন প্রথমে দেওয়া হবে স্বাস্থ্যকর্মী,ডাক্তার ও সাংবাদিকদের। পর্যায়ক্রমে সবাই পাবে এ ভ্যাকসিন। স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রথম টিকা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, যারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য সেক্টরে কাজ করে, প্রাইভেট সেক্টরসহ বলছি,কাউকে জোর করে দেওয়া হবে না। যে ভ্যাকসিন নিতে চায়,তাকেই আমরা আহবান করবো টিকা নেওয়ার জন্য।

করোনা টিকা ভারতে প্রথমে প্রয়োগ শুরু হলে বেশ কয়েকজন রোগী মারা যায়। টিকা নেওয়ার পর এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জণিত কারণে চার শতাধিক  রোগীও অসুস্থ  হয়। এতে জনগণের মধ্যে কিছুটা ভয়ভীতি শুরু হয়। অবশ্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,যারা মারা গেছেন তারা সবাই শ্বাসকষ্টসহ একাধিক রোগে ভুগছিলেন।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যারা শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগে ভুগছেন তাদের আপাতত করোনা টিকা নেওয়ার দরকার নেই।

করোনা টিকা নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের মধ্যেও একটা আতঙ্কবোধ কাজ করছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, ভ্যাকসিন নিয়ে মানুষের যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আমার প্রস্তাব এই যে, সন্দেহ,অনাস্থা দূর করার জন্য আমি বলবো প্রধানমন্ত্রী আপনি প্রথম টিকাটা  নিন। নিয়ে মানুষকে বলেন যে,এতে ভয়ের কিছু নেই।

এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন,করোনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সরকার এখন ভ্যাকসিন নিযে দুর্নীতি করছে। সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে এবং ভ্যাকসিন নিয়ে তারা আবার লুটপাটে নিমগ্ন রয়েছে,আর তারা দুর্নীতি করছে। এই দুর্নীতির কারণে তাদের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করাটা টোটালি ম্যাস হয়ে গেছে। এটা তারা সহজে করতে পারবে না। 

প্রধানমন্ত্রীকে আগে টিকা নেওয়ার ব্যাপারে বিএনপি মহাসচিবের পরামর্শের কঠোর সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন,বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের ডিমেনশিয়া রোগ হয়েছে কিনা, আমার সন্দেহ হচ্ছে।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বয়স বেড়ে গেলে ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তি আবোল তাবোল বলে। এই রোগটি শুধু মানুষেরই হয়, তা নয়। বুড়ো বয়সে মানুষ অপ্রাসঙ্গিক অবান্তর নানা নানা ধরণের কথা বলে। তাই আমার সন্দেহ হচ্ছে, মির্জা ফখরুল সাহেবের এই ডিমেনশিয়া রোগ হয়েছে কিনা।

আওয়ামী লীগের এই যুগ্মসম্পাদক আরো  বলেন, করোনা ভ্যাকসিনের ওপর সারা পৃথিবী আস্থা স্থাপন করেছে। ভারতে যখন কোটি কোটি মানুষকে এ ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। তখন মির্জা ফখরুল সাহেব জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, আমি মহাসচিবসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানাবো, সরকারের সাফল্যে আপনাদেও মুখ ম্লান হয়েছে। তাই বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার যে নোংরা খেলায় আপনারা নেমেছেন তা দেশ ও জাতির সাথে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।

Link copied!