নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পাহাড়ে শুরু হয়েছে সামাজিক উৎসব। তিনদিনব্যাপী এই আয়োজনের মধ্যে থাকছে ঐতিহ্যবাহী বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু ও বিহু। এর মধ্যে আজ চলছে ফুল বিজু। বাংলা বছরের শেষ দুই দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন এই উৎসব পালন করেন পাহাড়ে বসবাসরত আদিবাসীরা।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) এই উৎসব শুরু হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের ১১ ভাষাভাষীর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ১৪ পাহাড়ি জাতিসত্তার প্রধান সামাজিক উৎসব হচ্ছে বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু ও বিহু। স্থানভেদে উৎসবের নামের উচ্চারণগত পার্থক্য থাকলেও এর নিবেদন অভিন্ন। তাই এ উৎসব পাহাড়িদের শুধু আনন্দের নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের সব সম্প্রদায়ের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ঐক্য ও মৈত্রীর বন্ধনের প্রতীকও। মূলত পুরনো বছরের সব দুঃখ কষ্ট ও গ্লানিকে মুছে ফেলে দিয়ে নতুন বছরের নব উদ্যোগের শুভকামনা করা হয় এসব আচারানুষ্ঠানের মাধ্যমে।
আদিবাসীদের সামাজিক উৎসব
উৎসবের প্রথম দিন ফুল বিজু।
দ্বিতীয় দিন শনিবার মূল বিজু। এ দিন বাড়িতে বাড়িতে চলে খাওয়া-দাওয়ার পর্ব ও আনন্দ আয়োজন। মূল বিজুতে পাহাড়িরা হৈ-চৈ করে ঘুরে বেড়ানো আর খাওয়া-দাওয়ার মধ্য দিয়ে পুরনো বছরকে বিদায় জানায়।
উৎসবের শেষ দিন গজ্যাপজ্যা বিজু। এ দিন ঘরে বসে বিশ্রাম নেওয়া ছাড়াও বৌদ্ধ মন্দিরে প্রার্থনা ও বয়ঃজ্যেষ্ঠদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যত্ন-সহকারে খাওয়ানোসহ আশীর্বাদ নেওয়া হয়।
অন্যদিকে মারমা সম্প্রদায় এদিন ঐতিহ্যবাহী পানি খেলার আয়োজন করে। তারা পানি খেলার মধ্য দিয়ে পুরনো বছরের সব গ্লানি ও দুঃখ-কষ্ট দূরে ঠেলে দেয় এবং আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে। আগামী ১৬ এপ্রিল রাঙামাটি মারী স্টেডিয়ামে মারমা সাংস্কৃতিক সংসদের উদ্যোগের পানি খেলা অনুষ্ঠিত হবে।