অক্টোবর ১০, ২০২৩, ০৭:১২ পিএম
রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় কুর্মিটোলা হাইস্কুল এন্ড কলেজে অনিয়ম- দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে।
এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে নিয়োগ কমিটির রেজুলেশন জালিয়াতি, পত্রিকায় ভুয়া বিজ্ঞপ্তি, রেজুলেশনে কমিটির অজান্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন, রেজুলেশনের পাতা পরিবর্তন, নির্বাচনী পরীক্ষা না নিয়ে পরীক্ষা দেখানো, ডিজির প্রতিনিধির চিঠি জাল করা, নকল টেবুলেশন শিট প্রস্তুত করা, গভর্নিংবডির সভাপতি ও মাউশি (মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর) ডিজির প্রতিনিধির স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ পত্র প্রদান ও যোগদান পত্র গ্রহণ। এসব উপায়ে তিনি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুধু তাই নয়, খোদ আব্দুল খালেকের নিয়োগ নিয়েও উঠেছে নানা বিতর্ক। তথ্য গোপন করে অভিজ্ঞতা সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে বাগিয়ে নিয়েছেন নিজের নিয়োগ। জানা গেছে, ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তা প্রকাশ পেলে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন আব্দুল খালেক। পরে পুর্নবহাল হলেও বিষয়টি নিয়ে এখনো মামলা চলছে।
এ ব্যাপারে কুর্মিটোলা হাইস্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য ডি.এম নজরুল বলেন, ‘মো. আব্দুল খালেক সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিয়োগ নিয়েছেন। নিয়োগ পরবর্তী তাঁর যাবতীয় কাগজপত্র চাইলে তিনি অভিজ্ঞতা সনদপত্র না দেওয়ায় তাঁকে শোকজ করা হয়। এরপর তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কারের পর আব্দুল খালেক জজ কোর্টে মামলা করেন। এরপর তিনি প্রভাবশলী তিনজন ব্যক্তির সুপারিশ নিয়ে আরবিটেশন বোর্ডে গেলে এ জাতীয় সকল আবেদনে যাদের আদালতে মামলা নেই তাদেরকে যোগদান করাতে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিকে নির্দেশনা দেয়। তবে আব্দুল খালেকের আদালতে মামলা থাকলেও আরবিটেশন বোর্ডে মামলা না থাকার মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন। এরপর তিনি পুনরায় প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। আদালতের মামলা এখনো বিচারাধীন রয়েছে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রেজুলেশনে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি প্রয়াত সাহারা খাতুন ও তৎকালীন মাউশি ডিজি’রও স্বাক্ষর জালিয়াতি করেছেন আব্দুল খালেক। যা ইতোমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে।’
এছাড়াও আব্দুল খালেক কুর্মিটোলা হাইস্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পাওয়ার পরই মো. রেজাউল হক ও মোহাম্মদ আরিফুল আলম নামের দুইজনকে পদার্থবিদ্যা ও অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। খালেকের নিয়োগ দেওয়া মো. রেজাউল হকের একারই রয়েছে তিনটি নিয়োগপত্র।
তিনটি নিয়োগপত্রের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মো. রেজাউল হক বলেন, ‘কলেজের নিয়োগ বাদ হয়ে গেছে। স্কুলের নিয়োগে আমরা এখন স্কুলেই আছি। তাছাড়া আমি যতদিন কলেজে ছিলাম সেখানকার কোনো বেতন নেইনি।’
এসব অভিযোগের ব্যাপারে মো. আব্দুল খালেক বলেন, ‘নিয়োগ জালিয়াতির বিষয় সঠিক না। কমিটির লোকজন ছাড়া কী নিয়োগ দেওয়া সম্ভব?’
রেজুলেশনে কমিটি ও মাউশি ডিজির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে এ নিয়োগ দিয়েছেন কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এগুলো আমার বিষয় না, আমি ঠিক জানি না।’
কুর্মিটোলা হাইস্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান মো. আসলাম উদ্দিন এ ব্যাপারে বলেন, ‘আমরা এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে আসার পর এসব অনিয়মের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। ইতোমধ্যেই কমিটি রিপোর্ট প্রদান করেছেন। শিগগিরই এ ব্যাপারে গভর্নিং বডি যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’