দুইদিন ধরেই রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বৃষ্টি হচ্ছে। রাজধানীতে আজ বৃহস্পতিবার টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে অফিসফেরত মানুষেরা পড়েন চরম দুর্ভোগে। অনেকে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে বসে থাকেন গাড়িতে। কেউ কেউ ভিজে জবুথবু হয়ে বৃষ্টির মধ্যেই নিজগৃহের দিকে যাত্রা শুরু করেন। ফিরতে দেরি হওয়ায় অফিসফেরত লোকদের অনেকের বাসা থেকে স্বজনদের ফোনকল আসতে থাকে অবিরত।
মানুষজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হ্যান্ডেলে এবং ট্র্যাফিক অ্যালার্ট গ্রুপগুলোতেও নিজেদের দুর্ভোগের কথা শেয়ার করেছেন।
রাজধানীর মহাখালী, বিজয় নগর, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন স্থানে সবুজ বাতির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা যানবাহনের দীর্ঘ সারির ছবি শেয়ার করেছেন তারা।
একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী পোস্ট করেছেন যে, তিনি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে কিছুটা স্বস্তি বোধ করেছিলেন। কিন্তু তারপরে কয়েক ঘণ্টার জন্য খামারবাড়ি এলাকায় আটকা পড়েন।
সিগন্যালে দীর্ঘক্ষণ লাল বাতি দিয়ে রাখার জন্য কেউ কেউ ট্রাফিক পুলিশের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে গুলশান ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, বৃষ্টির কারণে নগরীর সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যা থেকে আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকায় ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকেই আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামে। বিভিন্ন সড়কে পানি জমে। সেই সঙ্গে বিকেলের দিকে দমকা হাওয়া বয়ে যায়। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামীকাল শুক্রবারও একইভাবে বৃষ্টি ঝরতে পারে। শনিবার থেকে বৃষ্টির মাত্রা কমে আসবে।
রাজশাহীর রেকর্ড
বুধ ও বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে ২৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে গত দুইদিনে। অক্টোবর মাসের দৈনিক বৃষ্টিপাত বিবেচনায় এটি গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলছেন, সর্বশেষ ২০ বছরে অক্টোবর মাসে ২৪ ঘণ্টায় এ রকম বৃষ্টি তো হয়ইনি, এমনকি এর কাছাকাছিও হয়নি।
এর আগে ২০১৯ সালে অক্টোবর মাসে রাজশাহীতে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। ২০২২ সালের অক্টোবরে ৫৬ মিলিমিটার, ২০১৩ সালে ৫২ মিলিমিটার, ২০১০ সালে ৫৭ মিলিমিটার, ২০১৮ সালে ৪৮ মিলিমিটার ও ২০১২ সালের অক্টোবরে ২৪ ঘণ্টায় ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, মূলত মৌসুমি বায়ুর অক্ষের সঙ্গে লঘুচাপ মিলিত হওয়ায় এবং একই সঙ্গে মৌসুমি বায়ু দেশের ওপর সক্রিয় থাকায় রাজশাহীসহ সারা দেশে অনেক বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
চট্টগ্রামের সড়কে হাটুপানি
চট্টগ্রামে কয়েকদিন ধরে তাপপ্রবাহ ছিল। এরপরই নামে স্বস্তির বৃষ্টি। কিন্তু বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হয় যা পরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ঝুম বৃষ্টিতে নগরীর নিচু এলাকার সড়কের কোথাও গোড়ালি থেকে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে যায়। এতে লোকজনের ভোগান্তি বেড়ে যায়।