‘যারা পুড়িয়ে মানুষ হত্যার মতো দুর্বৃত্তায়নে যুক্ত তাদের মন অন্ধকার। ক্ষমতার লোভে দেশের সম্পদ কারও হাতে তুলে দিতে রাজি নই।’
শনিবার (১১ নভেম্বর) দেশের প্রথম এবং এশিয়ার বৃহত্তম দৃষ্টিনন্দন কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশন চত্বরে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন প্রকল্পের রেল চলাচলের উদ্বোধন করে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গত ১৫ বছরে বদলে গেছে বাংলাদেশ। রেল সম্পূর্ণ অবহেলিত ছিল, লাভ-লোকসান হিসাব না করে এগিয়ে নেয় বর্তমান সরকার। সড়ক যোগাযোগ ও মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে বর্তমান সরকার কাজ করছে। সারাদেশের সাথে কক্সবাজারের রেল যোগাযোগ গড়ে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকতে পেরে সত্যি আমি খুব আনন্দিত। একটা কথা দিয়েছিলাম, কথাটা রাখলাম। আজকের দিনটি দেশের জনগণের জন্য একটা গর্বের দিন।
শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিয়ে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সারাদেশে অগ্নিসংযোগ করে মানুষের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানিরা। ধ্বংসের ওপর দাঁড়িয়ে দেশ গড়ার কাজে হাত দিয়েছিলেন জাতির পিতা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৯৬ সালে প্রথম ক্ষমতায় আসি। মাত্র পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিলাম। ২০০১ সালে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, আমি গ্যাস বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু করে। ফলে পরে আর ক্ষমতায় আসতে দেয়নি। এটা আমার পক্ষে সম্ভব না, কারণ আমি কিন্তু শেখ মুজিবের মেয়ে।
দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধনের পর মাতারবাড়ি জনসভায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
কক্সবাজার সৈকতের কাছে ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দের পাড়ায় নির্মিত হয়েছে ঝিনুক আকৃতির দৃষ্টিনন্দন ছয়তলাবিশিষ্ট আইকনিক রেলস্টেশন। ২৯ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা ১ লাখ ৮৭ হাজার বর্গফুটের রেলস্টেশনটি উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
নতুন এই রেলস্টেশনে থাকছে তারকা মানের হোটেল, শপিংমল, রেস্তোরাঁ, শিশুযত্ন কেন্দ্র, লাগেজ রাখার লকারসহ অত্যাধুনিক সুবিধা। দৈনিক ৪৬ হাজার মানুষের ধারণক্ষমতার শীতাতপনিয়ন্ত্রিত আইকনিক রেলস্টেশনে আরও আছে ডাকঘর, কনভেনশন সেন্টার, তথ্যকেন্দ্র, এটিএম বুথ ও প্রার্থনার স্থান।
চোখধাঁধানো আইকনিক এ স্টেশনের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে চারপাশে ব্যবহার করা হয়েছে কাচ; ছাদের ওপর অত্যাধুনিক স্টিল ক্যানোফি। ফলে দিনের বেলা ব্যবহার করতে হবে না বাড়তি আলো। আর আধুনিক নির্মাণশৈলীর কারণেই একে বলা হচ্ছে গ্রিন স্টেশন। একই সঙ্গে সুবিশাল চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে উঠে দোতলা থেকে নামতে হবে ট্রেনের প্ল্যাটফর্মে। আর আসার যাত্রীরা বের হবেন নিচ থেকে। যার জন্য প্রস্তুত চারটি চলন্ত সিঁড়ি। স্টেশনের ভেতরেই রয়েছে সাতটি টিকিট কাউন্টার। আর চাইলেই নির্দিষ্ট লকারে ব্যাগ রেখে পর্যটকরা ঘুরে আসতে পারবেন পুরো শহর।