পুলিশ বাহিনী চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ৩০, ২০২৩, ০১:১১ এএম

পুলিশ বাহিনী চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সংগৃহীত ছবি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘বিএনপি-পুলিশের সংঘর্ষ ও পরবর্তী হরতালে দলটি এ পর্যন্ত ২৬টি গাড়ি পুরোপুরি ভস্মীভূত করেছে। ভাঙচুর করেছে। আমাদের পুলিশ বাহিনী চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করে কর্তব্য পালন করছেন।’

রবিবার (২৯ অক্টোবর) জাতীয় সংসদে ২৮ অক্টোবর বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে ৩০০ বিধিতে দেওয়া বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি। 

এর আগে ২৮ অক্টোবরের বিএনপি-পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার স্থিরচিত্র সংসদে দেখান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

২০১৪ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগে ও পরে সহিংসতার চিত্র তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আবার মনে হয় সেই ধরনের ঘটনা ঘটানোর জন্য এগুলো একের পর এক করে যাচ্ছে।’

বিএনপি অসাংবিধানিক বিষয় নিয়ে জনসমাগম করেছে উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমরা তাদের একটি মাঠে যেতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা যায়নি। তাদের দলের কার্যালয়ের সামনে করতে চেয়েছিল। তারা নাইটিঙ্গেলের মোড় থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত অবস্থান করবে বলে আমাদের জানিয়েছিল। এর মধ্যে তারা থাকবেন।’

২৮ অক্টোবর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়া নারী কর্মীদের ওপর বিএনপি হামলা করেছে বলেও দাবি করেন মন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের নারী কর্মীদের পুলিশ উদ্ধার করেছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের সরিয়ে দেওয়ার সময়ে প্রধান বিচারপতির বাসায় তারা জোর করে ঢুকে গেল। এই ধরনের ঘটনা কোনো দিন আমরা দেখিনি। আমরা অবাক বিস্ময়ে দেখলাম। তখন বাধ্য হয়ে পুলিশ তাদের ওখান থেকে ডেসপ্যাচ করল। তারা আইডিবি ভবনে ঢুকে ওখানকার গাড়িগুলোতে অগ্নিসংযোগ করল। সেখানে ভাঙচুর করল।’

তিনি বলেন, জাজেজ কমপ্লেক্সে স্থাপিত আধুনিক সিসি ক্যামেরাগুলো ভেঙে ফেলল। তাদের উদ্দেশ্য এটাই ছিল যে তারা তাণ্ডব করবে। আর এই তাণ্ডবের যেন কোনো সাক্ষী না থাকে সে জন্য সিসি ক্যামেরাগুলো বিনষ্ট করে দিয়েছে।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনী যখন তাদের নাইটিঙ্গেল মোড়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হলো তখন দেখলাম পুলিশ সদস্যের ওপর বৃষ্টির মতি ঢিল ছুড়ল। এটা চোখে না দেখলে অনুমান করা যাবে না। মনে হয়েছিল তারা ব্যাগে করে ইট পাটকেল নিয়ে এসেছে।

সংঘর্ষের ঘটনার সময় আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-কর্মী ছিল না বলেও উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, সেই ঢিলের আঘাতে একজন পুলিশ সদস্য পড়ে গিয়েছিল। দেখলাম ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা তাকে পেটাচ্ছে। এখানেই ক্ষান্ত হয়নি, পুলিশ হাসপাতালে যেখানে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়, আহত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছিলেন সেখানেও হামলা।

বিএনপি নেতা-কর্মীরা শুধু পুলিশ নয় সংবাদ কর্মীদের ওপরও চড়াও হয়েছিল দাবি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের বেধড়ক পেটানো হয়েছিল। তারাও পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিল। একজন পথচারীও সেখানে সেবা নিতে গিয়েছিল। সেই সময় পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে বর্বরোচিত হামলা সেখানে করল। পুলিশের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করল। সেবিকাদের মারপিট করল। সামনে যা পেল তাই ভাঙচুর করল। এ ধরনের তাণ্ডব মনে হয় কোনো সভ্য জগতে দেখা যায় না।

তিনি বলেন, অবাক কথা হচ্ছে তারা পুলিশকে মারল, সাংবাদিক মারল, আমাদের মহিলা লীগের মেয়েদের গায়ে হাত তুলল, তাদের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করল—তারাই আবার হরতাল ডাকল। বিএনপি সারা দেশে নৈরাজ্য ছড়াচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

জামায়াতের সমাবেশ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল বলেন, নিবন্ধন না থাকা অনেক দল সভা-সমাবেশ করে। জামায়াতের নিবন্ধন নেই। তাদের পারমিশন দেওয়া হয়নি। তারা অবস্থান নিয়েছিল আমরা কিছু বলিনি। আমরা ধৈর্য সহকারে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি।

বিএনপির হামলাকে গাজাবাসীর ওপর ইসরায়েলি হামলার তুলনা করেন মন্ত্রী। পুলিশের কনস্টেবল নিহত ও অনেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আহত হয়েছেন বলেও সংসদে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

Link copied!