ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার নেইমার। ফ্রান্সের প্যারিস থেকে নিজেদের ক্লাবে আনতে রীতিমতো এলাহি কাণ্ড করতে হয়েছে সৌদির আল হিলালকে। বছর প্রতি ১০ কোটি ইউরো পারিশ্রমিক পাচ্ছেন নেইমার। পাশাপাশি তিনি নানান সুযোগ সুবিধা ভোগ করবেন।
একজন তারকা ফুটবলারকে যে সম্মান ও পারিশ্রমিক দিতে হয়, নেইমারের জন্য তা দিতে কার্পণ্য করেনি আল হিলাল। বছরে ১০ কোটি ইউরো পারিশ্রমিক, ২৫ কক্ষের বাড়ি, ৮টি গাড়ি, ব্যক্তিগত বিমান, এমনকি নেইমারের বেড়ানো ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাওয়াদাওয়ার খরচও দেবে সৌদি ক্লাবটি। শুধু কি তা–ই, প্যারিস থেকে নেইমারকে বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল বিমানে রিয়াদে নিয়ে গেছে আল হিলাল। পরে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভক্তদের সঙ্গে ব্রাজিলিয়ান এই তারকার পরিচয় করিয়ে দেয় ক্লাবটি।
বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল বিমানটির মালিক প্রিন্স আলওয়ালেদ বিন তালাল। সৌদি আরবের এই ধনকুবের দেশটির প্রথম বাদশাহ আবদুল আজিজের নাতি। বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ‘টাইম’ তাঁকে ‘আরবের ওয়ারেন বাফেট’ তকমা দিয়েছিল।
সৌদিতে গিয়ে এখনও অবশ্য নিজের বাড়িতে ওঠেননি নেইমার। সাময়িকভাবে তিনি উঠেছেন বিলাসবহুল ফোর সিজনস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে। আন্তর্জাতিক চেইন হোটেল ফোর সিজনসের সদরদপ্তর কানাডার টরন্টোয় অবস্থিত।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শতাধিক হোটেল আছে ফোর সিজনসের। ২০০৭ সাল থেকে এই চেইন হোটেলের (ফোর সিজনস হোটেলস অ্যান্ড রিসোর্ট) বেশির ভাগ শেয়ারের মালিক দুই ধনকুবের—যুক্তরাষ্ট্রের বিল গেটস ও সৌদি আরবের প্রিন্স আলওয়ালেদ বিন তালাল। বিল গেটস কাসকেড ইনভেস্টমেন্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এবং প্রিন্স আলওয়ালেদ বিন তালাল তাঁর কিংডম হোল্ডিং কোম্পানির মাধ্যমে ফোর সিজনসের বেশির ভাগ শেয়ারের মালিকানা কিনে নিয়েছেন।
ফোর সিজনস প্রতিষ্ঠান রিয়াদে তাদের এই হোটেলকে ‘স্থাপত্যগত আইকন’ হিসেবে নামকরণ করেছে।
হোটেলেই নেইমারকে বিলাসবহুল সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করেছে আল হিলাল। হোটেলের ৪৮তম তলায় ‘কিংডম’ ও ৫০তম তলায় ‘রয়্যাল’ অবস্থিত। পুরো রিয়াদ শহর এই দুটি কামরা থেকে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, কামরা দুটির ভেতরে লিভিং রুম, ব্যক্তিগত অফিস, সিনেমা দেখার কক্ষ, মার্বেল পাথরে বানানো প্রক্ষালন কক্ষ এবং ভাঁড়ারঘর আছে।
হোটেলেই রয়েছে একটি শপিংমল যেখান থেকে নেইমার ও তার প্রেমিকা ব্রুনা বিয়ানকার্দি কিনতে পারবেন নিত্যপ্রয়োজনীয় সব দ্রব্যাদি। এ ছাড়া হোটেলে নেইমার আরও পাচ্ছেন স্পা সেন্টারেও বিশেষ সেবার ব্যবস্থা। সেখানে মরোক্কান বাথ, স্টোন ম্যাসাজ, সনা, জাকুজ্জি ও কম তাপমাত্রার পুল রয়েছে। পাশাপাশি হোটেলটিতে জিমনেসিয়াম আর টেবিল টেনিস কোর্ট তো আছেই।
হোটেলে দুটি বিশাল বলরুম ছাড়াও দুটি রেস্টুরেন্ট আছে। সেখানে চাইনিজ, জাপানিজ, ভারতীয় ও মধ্যপ্রাচ্যের খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।
হোটেলটির ‘সুপিরিয়র’ কামরার ভাড়া ৫ হাজার ব্রাজিলিয়ান রিয়াল থেকে শুরু। বিলাসবহুল প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুইটের ভাড়া ৩৩ হাজার ব্রাজিলিয়ান রিয়াল।