ফাঁকা বাসাকেই টার্গেট করে চুরি করে ওরা!

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ২৭, ২০২৩, ০৮:৩৫ পিএম

ফাঁকা বাসাকেই টার্গেট করে চুরি করে ওরা!

চোরের কতই না কৌশল থাকে। কেউ সিঁদ কাটে। কেউবা পকেট কাটে। কেউ চোখের পলকে সাবাড় কনে ঘরের জিনিসপত্র! কিন্তু রাজধানীতে এমন একটি চক্রের সন্ধ্যান মিলেছে যারা টার্গেট করে ফাঁকা বাসা! বেছে বেছে এমন বাসাতেই তারা চুরি করে। 

ফাঁকা বাসার গ্রিল কেটে ও তালা ভেঙে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, নগদ টাকাসহ স্বর্ণালংকার দীর্ঘদিন ধরে চুরি করত এই চক্র। দুই বছর ধরে চক্রটি রাজধানীজুড়ে শতাধিক চুরি করেছে। সম্প্রতি রাজধানীর লালবাগের একটি ভবনের ফাঁকা তিনটি ফ্ল্যাটে চুরির ঘটনায় তদন্ত করতে নেমে এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

শনিবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর লালবাগ থেকে চক্রটির সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. সঞ্জীব (২৪), মো. হেলাল উদ্দিন (২৪), মো. রনি (৩০), মো. রিপন (৩২), মো. তরিকুল ইসলাম (৩০), মো. শামীম (২৩) ও মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে সুমন (৩৩)।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)র মিডিয়া সেন্টারে রবিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জাফর হোসেন।

গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিসি মো. জাফর হোসেন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রথমে একটি বাসা রেকি করেন। বাসা ফাঁকা থাকলে সেই বাসায় টার্গেট করে চুরি করতেন। মূলত যে বাসাগুলোতে নিরাপত্তাকর্মী থাকেন না, সেগুলোই টার্গেট করতেন তাঁরা। চোরাই ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার বিক্রি করা হতো রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন মার্কেটে। 

লালবাগের ওই ভবনের ফাঁকা তিনটি ফ্ল্যাটে চুরির ঘটনার পর ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে চোর চক্রের চারজনকে শনাক্ত করে তারা। এরপর চুরি যাওয়া একটি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদে নিলে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের একটি দোকানে চোরাই ল্যাপটপ কেনাবেচার কথা জানা যায়। সেখানে অভিযান চালিয়ে চুরি যাওয়া দুটি ল্যাপটপসহ চোরাই ৪৮টি ল্যাপটপ জব্দ করে পুলিশ।

ডিসি জাফর হোসেন আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা শনির আখড়ায় একটি কারখানায় কাজ করতেন। সেখান থেকেই এভাবে চুরি করার জন্য একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হন। রাজধানীর কদমতলী, সূত্রাপুর, কলাবাগান, লালবাগ, ওয়ারীসহ বিভিন্ন থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে তাঁরা গ্রেপ্তারও হয়েছেন।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের দোকানটি চোরাই ল্যাপটপ কম দামে কিনত। এরপর সেগুলো ফরম্যাট দেওয়ার পর উইন্ডোজ দিয়ে বিক্রি করে দিত। তারা গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস কিংবা ফাঁসের হুমকি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত না। 

সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানোর পর ল্যাপটপের মালিকানার তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এরপর সঠিক মালিকের হাতে জব্দকৃত ল্যাপটপগুলো তুলে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

Link copied!