মার্চ ৩, ২০২৫, ০১:১১ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
এক নারী শ্রমিক আত্মহত্যার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ মরদেহ গুম করেছে—এমন অভিযোগে গাজীপুরে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
সোমবার, ০৩ মার্চ সকালে শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। আগুন দেওয়া হয় কয়েকটি প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলে। ভাঙচুর করা হয়েছে কারখানাও। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে কয়েকটি কারখানায়।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২-এর পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন।
নিহত ওই নারী শ্রমিকের নাম আফসানা আক্তার লাবনী (৩০)। তিনি ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার পাঁচরুখী এলাকার আফসার আলীর মেয়ে। তিনি প্যানারোমা অ্যাপারেলস লিমিটেডে সুইং অপারেটর ছিলেন।
আন্দোলনরত শ্রমিক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লাবনী অসুস্থ হওয়ার কারণে রোববার কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির আবেদন করেন। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ ছুটি মঞ্জুর না করায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি কারখানার সাততলা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে ওই নারীর মরদেহ গুমের চেষ্টা করা হচ্ছে এমন অভিযোগ এনে আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কারখানায় বিক্ষোভ শুরু করে শ্রমিকেরা। একপর্যায়ে শ্রমিকেরা কারখানার জানালা কাঁচ ভাঙচুর করে ও বাইরে রাখা একটি প্রাইভেট কার ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে।
এ সময় প্রায় দেড় ঘণ্টা ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে সেনাবাহিনী, শিল্প-পুলিশ ও মহানগর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল তাদের কারখানার এক নারী শ্রমিক ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করে। বলা হয়েছিল, স্বামীর সাথে ঝামেলার কারণে আত্মহত্যা করেছে। গতকাল শ্রমিকে এনিয়ে কিছু বলে নাই। বিকেল পর্যন্ত কাজ করে চলে যায়। এই ঘটনার জেরে আজ সকালে উত্তেজিত শ্রমিকেরা একটি প্রাইভেট কার ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়। কারখানা ভাঙচুর করে।’
পুলিশ সুপার বলেন, শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।
অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আশপাশের ১২টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
তবে জানা গেছে, এই পরিস্থিতির কারণে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ভোগড়া বাইপাস, নাওজোড়র ও ইটাহাটা এলাকার অন্তত অর্ধশতাধিক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।