এপ্রিল ২৪, ২০২৩, ০৬:৫৩ পিএম
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আব্দুল মতিনকে (৭০) গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর টিকাটুলিতে র্যাব-৩ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-৩ স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) আসাদুজ্জামান।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, আব্দুল মতিন দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক ছিলেন। রবিবার সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ এলাকা থেকে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেওয়া এই যুদ্ধাপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়।
আব্দুর মতিনের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ৫টি অভিযোগ আনা হয়।
ধৃত আসামি আব্দুল মতিন এবং উক্ত মামলার অপর আসামি তাঁর ভাই আব্দুল আজিজ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের বারপুঞ্জিতে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে তাঁরা পালিয়ে বড়লেখায় এসে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন।
আব্দুল মতিন বড়লেখা থানা জামায়াত ইসলামী এবং ১৯৭১ সালে গঠিত ইসলামী ছাত্র সংঘের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। আব্দুল মতিনসহ রাজাকার বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা মিলে মৌলভীবাজার এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ প্রমাণিত এবং সাজা মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
২০১৬ সালে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পরপরই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে তিনি পলাতক জীবন যাপন শুরু করেন। মৌলভীবাজারের বড়লেখা থানাধীন পাখিয়ালা গ্রামের নিজ বাড়ি ছেড়ে সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ থানা এলাকায় ভাগ্নের বাড়িতে আত্মগোপন করেন আব্দুল মতিন। সেখানে নিজেকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় দিতেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় হতে শুরু করে পলাতক জীবন শুরু করার পূর্ব পর্যন্ত মতিন জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। ভাগ্নের বাড়িতে ৭ বছর আত্মগোপনে থাকার পর রবিবার রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৩ কর্তৃক গ্রেফতার হন এই অপরাধী।
গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।