তিস্তাসহ দুই দেশের অভিন্ন ৫৪ নদী রক্ষা নিশ্চিতের তাগিদ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ২৯, ২০২২, ১০:০৩ পিএম

তিস্তাসহ দুই দেশের অভিন্ন ৫৪ নদী রক্ষা নিশ্চিতের তাগিদ

বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে অভিন্ন অর্ধশতাধিক নদী রক্ষা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পানির ন্যায্য বন্টন নিশ্চিত করতে না পারলে এই অঞ্চলের নিরাপত্তা আর স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। বেসরকারি যমুনা টেলিভিশনের অনলাইন নিউজ পোর্টাল যমুনা ডট টিভি’র এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

রবিবার ভারতের আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে তৃতীয় নদী সম্মেলনের শেষ দিনে  তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪ নদী রক্ষা এবং এসবের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করার তাগিদ এসেছে।  একই সঙ্গে সংকট মোকাবেলায়  দুই দেশকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

গতকাল শনিবার সকালে তৃতীয় নদী সম্মেলন শুরু হয়। বাংলাদেশ ও ভারতের অভিন্ন নদীসহ নানা সমস্যা সমাধানে পরামর্শ ও সম্ভাব্য উপায় খোঁজার উদ্দেশ্যে বেসরকারিভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এই সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্করসহ দু’দেশের নীতিনির্ধারকরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, সম্মেলনে ভারত-বাংলাদেশ ছাড়াও সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, ভুটান, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, ফিলিপাইন ও ব্রুনেই সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সম্মেলনের শেষ দিনে ভাটির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যে ঝুঁকি বেশি, নদী সম্মেলনে উঠে আসে সে কথাও। সম্মেলনে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, “আমরা যেহেতু নিম্নাঞ্চলে থাকি, সেহেতু অনেক সময় পানির কারণে বন্যা হয়। শুধু সেটা নয়, পানি ভাগাভাগিতে আমাদের ন্যায্যতা দরকার।”

 

ভারতের অভ্যন্তরীন রাজনীতির মারপ্যাচে ঝুলে গেছে তিস্তার পানিবন্টন চুক্তি। কবে নাগাদ এর সমাধান আসবে, তাও অজানা। সম্মেলনে আলোচনায় আসে দু’দেশের অভিন্ন নদী রক্ষার গুরুত্বের কথা।

ভারতের নদী বিশেষজ্ঞ উত্তম সিনহা বলেন, এটা (তিস্তার পানিবন্টন) আলোচনার টেবিলে আছে। পশ্চিমবঙ্গের সরকারকে রাজি করাতে হবে এবং বুঝাতে হবে, তিস্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজন।

অন্যদিকে এশিয়ান কনফ্লুয়েন্স এর পরিচালক সব্যসাচী দত্ত মনে করিয়ে দেন, তিস্তা ছাড়া আরও অনেকগুলো নদী আছে। এগুলোকে কীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা যায় এ বিষয়েও কথা চলছে বলে জানান তিনি।

নদীর সাথে কেবল জীবন জীবিকা নয়, নিরাপত্তার বিষয়ও জড়িত বলে মত দেন বিশেষজ্ঞরা। তাই এ ইস্যুতে ন্যায্যতা নিশ্চিতের তাগিদ দেন অনেকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “পানি বন্টন যেমন প্রযোজন, তেমনি পানি ব্যবহার করে যে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে, সেটিরও সুযোগ নেয়া। এটিও এক ধরনের নতুন ডাইমেনশন।”

বাংলাদেশী ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত বলেন, “সম্মেলনের প্রথমদিনে আমাকে সরাসরি একজন জিজ্ঞাসা করেছে, এটি করলে ভারতের কী লাভ হবে? এসব প্রশ্নের উত্তর গবেষক, সরকারের নীতি-নির্ধারকদের তৈরি করতে হবে।”

আগামী বছর বাংলাদেশে পরবর্তী নদী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

Link copied!