দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণেই দ্রব্যমূল্য বাড়ছে: ফখরুল

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

আগস্ট ১৭, ২০২২, ০৪:০২ পিএম

দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণেই দ্রব্যমূল্য বাড়ছে: ফখরুল

দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দৈনন্দির ভোগ্যপণ্য পরিস্থিতি তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের কিছু সুবিধাভোগী দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী চক্রের হাতে দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবস্থাপনা জিম্মি হয়ে আছে। মূল্য বৃদ্ধির এই দুর্নীতিবাজ চক্রের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে সরকারের চালিকা শক্তিরাই। সরিষায় ভূত থাকলে ভূত তাড়াবে কে? রক্ষক যখন ভক্ষক হয় তখন যা হবার তাই হচ্ছে বাংলাদেশে।”

‘‘এখানকার যে মূল্যস্ফীতি, এখানে যে অর্থনৈতিক দুরাবস্থা এর সবকিছুর মূলে হচ্ছে সরকারের দুর্নীতি। এই দুর্নীতির কারণেই দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, দুর্নীতির কারণেই পাগলা ঘোড়ার দাপটে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও হত দরিদ্ররা পিষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সরকারের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে আজকে এই অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে।”

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘যেখানে সরকারের বিনিয়োগ করার প্রয়োজন নেই সরকার সেখানে টাকা দিচ্ছে। ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মাসেতু ৩০ হাজার কোটি টাকার উপরে নিয়ে গেল। কিছুদিন আগে আপনারা দেখেছেন, এয়ারপোর্টের রাস্তার সমস্যা- এখানে প্রতি কিলোমিটারে ২৩০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। অথচ কী অবস্থা? ১০ বছরে এখন পর্যন্ত এই অবস্থায়ই পড়ে আছে। অর্থাৎ এসবের মূল কারণটাই হচ্ছে দুর্নীতি।”

‘‘জ্বালানিতে দেখেছেন, তেলের বেলায় কী দুর্নীতি করেছে, বিপিসি একইভাবে দুর্নীতি করেছে, বিদ্যুতের বেলা দেখেছেন, তারা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। সেই কারণে আজকে এই দুর্নীতি হচ্ছে। হয়ত বিশ্ব বাজারের কারণে সহনীয় পর্যায় কিছু হতে পারতো। কিন্তু এখন যেটা হচ্ছে সেটা সম্পূর্ণভাবে দুর্নীতির কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৭৪ সালে তারা এভাবে দুর্নীতি করেছে, আজকেও একইভাবে তারা দুর্নীতি করছে।”

এই অবস্থার পরিবর্তনে ‘রাজপথে’ আন্দোলন’ সংগঠিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘এই দুর্নীতিবাজ সরকারের জনগনের কাছে কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তারা জনগনের কল্যাণের তোয়াক্কা না করে নিদারুণভাবে নিষ্ঠুর ও নির্দয় হয়ে পড়েছে।”

‘‘আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করি।”

দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যেমূল্যের ঊধর্বগতি ‍ও মূল্যস্ফীতির তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘সরকারি হিসাবেই গত জুন মাসের মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৫৬% যা গত ৯ বছরে সর্বোচ্চ রেকর্ড। বর্তমানে মানুষের ক্রয় ক্ষমতাও অনেক কমে গেছে। নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের মানুষ নানাভাবে ব্যয় কমিয়ে টিকিয়ে থাকার চেষ্টা করছেন। নিজের আয় দিয়ে আর চলতে না পারায় স্ত্রীকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়ে অনেকেই ফ্যামিলি বাসা ছেড়ে উঠেছেন মেসে। মানুষ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে।”

‘‘কাঁচাবাজার থেকে একটি পরিবারে যা যা কিনতে হয়, তার প্রায় সব কিছুরই দাম আরেক দফা বেড়েছে। এই তালিকায় চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা আছে, তেমনি রয়েছে সবজি, ডিম, মরুগির দাম। পিছিয়ে নেই মাছ ব্যবসায়ীরাও। এই মূল্য বৃদ্ধি সেসব সীমিত আয়ের মানুষের ওপরে সরাসরি আঘাত, যারা ইতিমধ্যে মূল্যস্ফীতিতে নাকাল।”

Link copied!