চৈত্রের দাবদাহের কথা শোনা যায়। কিন্তু এই ভরআষাঢ়ের দাবদাহ! আবহাওয়ার এই চরমভাবাপন্ন পরিস্থিতি জনজীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। দিনরাত তীব্র গরম। রাতের তাপমাত্রাও থাকছে ৩০ ডিগ্রির ওপরে। দিন ও রাতে তাপমাত্রার পার্থক্য প্রায় একই থাকার কারণে দেশবাসীকে আরও দুই দিন তীব্র গরমে ভুগতে হবে। এমনটাই জানাচ্ছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় এই তাপ দাহ থাকবে সপ্তাহ জুড়ে। রবিবার বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে, বৃষ্টি শুরু হলে ধীরে ধীরে তাপমাত্রাও কমে স্বাভাবিক হবে।
অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সারা দেশে যে তাপমাত্রা ছিল সেটা গত ত্রিশ বছরের সেই দিনের রেকর্ড করা তাপমাত্রার চেয়ে এক থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। গত ত্রিশ বছরে, বছরের এই দিনে ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ৩১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কিন্তু এই বছরের একই দিনে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অর্থাৎ বিগত বছরগুলোতে যে পরিমাণ তাপমাত্রা এই দিনে থাকার কথা তার চেয়ে ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেশি। বৃষ্টি না হওয়া, ওডিশা উপকূল ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় একটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ দেখা দেওয়ায় বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। সাগরে বায়ুচাপ বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ছিল ৭০ ভাগের ওপরে ফলে গরম আরও তীব্র হয়েছে। এই কারণে ঢাকা, টাঙ্গাইল, রংপুর, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলাসহ রাজশাহী ও সিলেটে বিভাগের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে যা অব্যাহত থাকবে আরও কয়েক দিন।
আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, অন্য দিনের থেকে সম্প্রতি সূর্যের কিরণকাল বেশি থাকাতেও তাপমাত্রা বেড়েছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য অনেকটাই কম থাকার কারণে সব সময়ই বেশি বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে। ঢাকাসহ দেশব্যাপী বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এমন তাপ দাহ অন্তত আরও দুই দিন অব্যাহত থাকবে। সপ্তাহের শেষে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা বাড়লে গরমের তীব্রতা কমবে।