অক্টোবর ৯, ২০২২, ০৮:১৬ পিএম
নৌপরিবহন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রীতির নেতৃত্ব দিচ্ছেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করেছেন। এসব কারণে প্রধানমন্ত্রী আজকে পৃথিবীতে প্রশংসিত হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী প্রশংসিত হওয়া মানে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ প্রশংসিত হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী ধর্মের ভিত্তিতে কোন রেখাপাত চান না, বিভক্তি চান না। তিনি ভালোবাসা তৈরি করতে চান। হানাহানি বিরোধ থেকে মুক্ত থেকে আগামী প্রজন্মের জন্য সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে দিতে চান।
রবিবার ঢাকায় মেরুল বাড্ডাস্থ আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে ‘শুভ প্রবারণা পূর্ণিমার তাৎপর্য ও বিশ্বশান্তি’ শীর্ষক সদ্ধর্ম আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন নৌ প্রতিমন্ত্রী । অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন।
ধর্ম যার যার উৎসব সবার প্রধানমন্ত্রীর এ কথার প্রসঙ্গ টেনে নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলেই- বিশ্বের সব জায়গায় সম্মানিত হচ্ছি। বিশ্বের সব জায়গায় যখন প্রধানমন্ত্রী সম্মানিত হোন, তখন দেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষ সম্মানিতবোধ করে। এটা অসাম্প্রদায়িক চেতনার কারণে সম্ভব হয়েছে। যা মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে পেয়েছি। সকল ধর্ম-বর্ণের সম্মলিত এই বাংলাদেশ।’
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর সমাজের বিভক্ত, রাজনৈতিক বিভক্তি ও ধর্মীয় বিভক্তি দিয়ে দেশ পরিচালনার চেষ্টা করা হয়েছিল। ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করা হয়েছিল। এতে আমাদের কোনো মঙ্গল আসেনি। কারণ ধর্ম কখনো ক্ষমতার হাতিয়ার হতে পারে না। এটা প্রমাণ হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর হাত থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করেছিলেন এবং সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করে একটি জাতিসত্বা সৃষ্টি করেছিলেন। যেই জাতিসত্ত্বা সৃষ্টির সাথে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ যুক্ত ছিল। তারা রক্ত দিয়ে এই বাংলাদেশের নাম লিখিয়েছে। শুধু একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ-জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সেটাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন।বঙ্গবন্ধু আমাদের একটি সংবিধান দিয়েছেন। আমাদের ৭২ এর সংবিধান রয়েছে; যে সংবিধান সম্প্রীতির কথা বলে। যে সম্প্রীতি নিয়ে আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার কাজ শুরু করেছিলেন। স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিল। এর পরে বাংলাদেশের সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়ে গেছে। অসাম্প্রদায়িকতা বিনষ্ট হয়ে গেছে। এদেশকে বিভাজন করা হয়েছে ধর্ম দিয়ে, সমাজ দিয়ে, অর্থ দিয়ে। বিভক্তি করা হয়েছে। কিন্তু এদেশ এগিয়ে যেতে পারেনি। এদেশ অন্ধকার থেকে অন্ধকারে তলিয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে যখন এখানে দাঁড়িয়ে এই শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উৎযাপন করছি, আমরা খুব গর্ব করে বলতে পারি আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আছি। আমরা গর্ব করে বলতে পারি আমরা অসম্প্রদায়িক চেতনায় আছি। আমাদের পাঁচশ বছরের ইতিহাস ও সংস্কৃতির পুঁথি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে মনের মধ্যে যে অসাম্প্রদায়িক পুঁথি গেঁথে রেখেছি, সেটাকে কেড়ে নিতে পারেনি। আজকের বাংলাদেশ সেটাই প্রমাণ করে।’
ঢাকা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ সদ্ধর্মকান্ডারী শ্রীমৎ ধর্মমিত্র মহাথের এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি প্রকৌশলী দিব্যেন্দু বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া।
বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান আনন্দঘন ধর্মীয় তিথি শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা। এই পূর্ণিমায় তিন মাসব্যাপী তথাগত বুদ্ধ তাবতিংশ স্বর্গে মাতৃদেবীকে অভিধর্ম দেশনার পর সাংকাশ্য নগরে অবতরণ করেন। এ দিনে ভিক্ষুসংঘকে বহুজন হিত, সুখ, কল্যাণ, বিশ্বশান্তির জন্য সদ্ধর্ম প্রচার ও প্রসারের দিকে ছড়িয়ে পড়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। এই পূর্ণিমা তিথিতেই ত্রৈমাসিক বর্ষাবাসের পরিসমাপ্তি হয়।