বিএনপি-জামায়াত সম্পর্কে ভাঙনের গুঞ্জন শোনা গেলেও বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় জোট না ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। গত ২১ আগস্ট শনিবার উত্তরায় বিএনপি ও জামায়াতের ঊর্ধ্বতন দুই নেতা বৈঠক করেন। বৈঠকের পর দিন অর্থাৎ ২২ আগস্ট রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরোয়ার বক্তব্য রাখেন।
জোট হিসেবে আন্দোলনের পরিকল্পনা
রাজধানীর উত্তরায় বিএনপি ও জামায়াতের নেতার সাক্ষাতের সময় দুই নেতাই সরকার পরিবর্তনের আন্দোলনের ওপর জোর দেন। এই আন্দোলনে জোটের বাহিরেও বিভিন্ন দলগুলোকে শরিক করার চেষ্টা চালান হবে বলে জানান তারা। এরই প্রেক্ষিতে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে ২০-দলীয় জোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ জোটের বাইরের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও চিঠি দেবে বিএনপি।
এই মুহুর্তে সম্পর্ক ছিন্ন করলে বরং জামায়াতকে চাপে রেখে বিএনপির বিরুদ্ধেই কাজে লাগাবে সরকার। বিএনপি সরকারকে সেসুযোগ দিতে চায় না। তাছাড়া সামনে সরকারবিরোধী আন্দোলনের যে ছক তৈরি করছে ২০ দলীয় জোট তা সফল করতে জামায়াতকে সঙ্গে রাখা জরুরি।
আন্দোলনে থাকবে জামায়াত
বিএনপির এক নেতা বলেন, অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্য কোনো কারণে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক ছিন্ন হলেও সরকার বিরোধী আন্দোলনে দুদলের পথ হবে অভিন্ন। তাই এই মুহুর্তে জোট ভাঙ্গার পরিকল্পনা নেই।
জামায়াতের এক নেতা জানান, খালেদা জিয়া নেতৃত্বে থাকাকালীন বিএনপি জোটের বাইরে যাবে না জামায়াত। বিরোধী রাজনৈতিক জোটের চরম এই দুঃসময়ে জোট ছেড়ে গেলে দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও জামায়াতকে বাঁকা চোখে দেখবে।
বৃহত্তর এই জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) একাংশের মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিম বলেন, জোটের দলগুলোর মধ্যে মান-অভিমান থাকলেও সম্পর্ক ছিন্নের মতো ঘটনা ঘটেনি। বরং দেশের ক্রান্তিকালে জোট নেতাদের ঐক্যবদ্ধ আলোচনাতেই সব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
জামায়াতের জোট ছাড়া নিয়ে গুঞ্জনের কারণ
জামায়াত বিষয়ে দলের তৃণমূল ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মতামত নেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সর্বশেষ এক বছর আগে স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরও মতামত নেন তিনি। দুই-একজন ছাড়া বাকি সবাই জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার বিষয়ে মত দেন। এর পর গুলশানে গত বছর ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গেলে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এই মতামত জানান। জবাবে খালেদা জিয়া জামায়াত সঙ্গ ত্যাগের পর কি হবে সেটা নিয়েও ভাবতে বলেছিলেন বিএনপি নেতাদের।