জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধি দল বুধবার বঙ্গোপসাগরের দুর্গম দ্বীপ ভাসানচরে তিন দিনের পরিদর্শনে যাবে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সমালোচনা সত্বেও বাংলাদেশ সরকার ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ১৩,০০০ এরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ভাসানচরে পুনর্বাসিত করেছে।
১০ লাখের বেশি শরণার্থীর বাস করা রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর উপচে পড়া ভীড় সামলাতে বাংলাদেশ সরকার অন্তত ১ লাখ রোহিঙ্গা শরনার্থীকে পুনর্বাসিত করার পরিকল্পনা করেছে।
মার্কিন শরণার্থী সংস্থা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এক ই-মেইলে জানায়, ‘এই তিন দিনের সফরে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত মার্কিন সংস্থাগুলির বিশেষজ্ঞদের একত্রিত করা হবে।’
তারা আরও জানায়, ‘এই সফরে ভাসান চরের বর্তমান পরিস্থিতি এবং সুযোগ-সুবিধাগুলি পর্যবেক্ষণ করা হবে, সেখানে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়ন করা এবং পাশাপাশি ভাসান চরে কর্মরত কর্তৃপক্ষ এবং অন্যদের সাথে আলোচনা করা হবে।’
জাতিসংঘ এর আগে গণমাধ্যমকে জানায়, রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরিত করা এই দ্বীপের প্রযুক্তিগত ও সুরক্ষা মূল্যায়ন করার অনুমতি তাদের দেওয়া হয়নি এবং সেখানে শরণার্থীদের পুনর্বাসনের সাথেও তারা জড়িত ছিল না।বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা সংখ্যালঘু গোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের এই দ্বীপ থেকে অন্য কোথাও যাওয়ার অনুমতি নেই, এটি বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ অংশ থেকেও কয়েক ঘণ্টার দূরত্বে রয়েছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে কাউকে জোর করা হয়নি। রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় স্থানান্তরিত হয়েছেন। বাংলাদেশ অবশ্য ভাসানচরের নিরাপত্তা নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগকে প্রত্যাখ্যান করেছে। বন্যা নিরোধক অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি ১০ লক্ষ মানুষের জন্য হাসপাতাল ও ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নির্মাণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, শরণার্থী শিবিরগুলো জনাকীর্ণ হওয়া অপরাধকে বাড়িয়ে তোলে। কিছু রোহিঙ্গাও জানিয়েছে-শিবিরগুলিতে ঘন ঘন সহিংসতাই তাদের পুনর্বাসনের কারণ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা আশা করি স্থান পরিবর্তন সম্পর্কে জাতিসংঘের যে উদ্বেগ রয়েছে তা দূও হবে এবং তারা রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের সাথে জড়িত হবে এবং রোহিঙ্গদেরকে তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে’।
সূত্র: রয়টার্স।