যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির পথে হাঁটবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন: ইইউ রাষ্ট্রদূত

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ২৮, ২০২৩, ১০:২৮ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির পথে হাঁটবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন: ইইউ রাষ্ট্রদূত

আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য যে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে সে পথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) হাঁটবে না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত সংস্থাটির রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।

গতকাল শনিবার বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা বলেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিজস্ব নীতি গ্রহণ করে তা ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতি ভিন্ন। আমরা নির্বাচনী পূর্ব মিশনে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমার বিশ্বাস, রাজনৈতিক দলগুলো জানে নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা। নির্ব্চনে কোন দল অংশ নেবে, একান্তই তাদের ব্যাপার।”নির্বাচন নিয়ে যদি কোনো অবিশ্বাস থাকে, তাহলে তারা সংলাপে বসতে পারেন  বলেও তিনি জানান।

ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের জিএসপি প্লাস সুবিধা বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হলে তা দারুণ ইতিবাচক সিগন্যাল দেবে যে বাংলাদেশ জিএসপি প্লাসের জন্য প্রস্তুত।”

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে আসছে উল্লেখ করে চার্লস হোয়াইটলি বলেন, “১৩ দিনের মিশনে পর্যবেক্ষক দল ৮ জুলাই বাংলাদেশে আসবে। তারা ২১ জুলাই পর্যন্ত থাকবে। এ সময়ে তারা রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমসহ সবার সঙ্গে কথা বলবেন। এখানের নির্বাচনী পরিবেশ ও গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করবেন।”

প্রসঙ্গত, জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে হলে নতুন এক নীতিমালার শর্ত পূরণ করতে হবে। এর আওতায় বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে তার জন্য দায়ী ব্যক্তি এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

গত বুধবার (২৪ মে) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এক বিবৃতিতে ওই ঘোষণা দেন।  বিবৃতিটি তিনি টুইটারেও শেয়ার করেন।

ব্লিঙ্কেন ওই টুইট বার্তায় বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনপ্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আমি আজকে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। এই নীতির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে।’

যাঁদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ হবে, তাঁদের মধ্যে বাংলাদেশের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা–কর্মচারী, সরকারপন্থী ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে, এমন কাজের মধ্যে রয়েছে ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতার মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার প্রয়োগ করতে বাধা দেওয়া এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখা।

ব্লিঙ্কেন আরও বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমসহ সবার। যারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায়, তাদের সবাইকে আমাদের সমর্থন দিতে আমি এই নীতি ঘোষণা করছি।

Link copied!