করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি ঘোষণায় দেশে ‘কঠোর’ লকডাউন (বিধিনিষেধ) চলছে বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে। কিন্তু লকডাউনের দ্বিতীয় দিন নানা অজুহাতে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
বিধিনিষেধের লকডাউনে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। রিকশা, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার সব কিছুই থামিয়ে থামিয়ে জিজ্ঞেস করছেন, কে কোথায় যাবেন। যথাযথ কারণ বলতে পারলে গন্তব্যে যেতে দিচ্ছেন। আর না বলতে পারলে পথ থেকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। দেখতে চাইছেন 'মুভমেন্ট পাস'।
ঢাকার রাস্তায় সার্বিক চিত্র
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সকাল থেকে রাজধানীর শনির আখড়া,যাত্রাবাড়ী,শাহবাগ,ফার্মগেট এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।সরেজমিনে দেখা যায়, কেউ রাস্তায় বের হলেই পুলিশ জানতে চাইছে ‘মুভমেন্ট পাস’ আছে কি না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস থামিয়ে জানতে চাইছে কী কারণে বা কি কাজে বের হয়েছেন। যথাযথ কারণ বলতে পারলেই যাতায়াত করতে দিচ্ছে পুলিশ। এছাড়া যদি কেউ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া রাস্তায় মোটরসাইকেল, কভার্ড ভ্যান ও পিকআপ ভ্যান বের করলে মামলা দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। প্রধান সড়কে কোনো রিকশা যাত্রী নিয়ে এলে, যাত্রী নামিয়ে রিকশা ঘুরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ।
অনেকেই বিনা কারনেই বের হয়েছে। অনেক বাজার করার কথাও বলছেন। তবে সবচেয়ে বেশি ওষুধ কিনতে বের হবার কথা বলেছেন সাধারন জনগণ। অনেকে প্রেসক্রিপশন প্রদর্শন করলেও বাকিদের ক্ষেত্রে তা দেখা যায় নি।
নাঈমুর রহমান ও শহীদুজ্জামান লকডাউনে মোটরসাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন। তারা বলেন, একজন যাবেন বিদ্যুৎ বিল দিতে। অন্যজন মোটরসাইকেল মেরামত করতে বের হয়েছেন। কাজেই বের হয়েছি, তারপরও আমাদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলাম, কিন্তু পুলিশ কোনো কথাই শুনবে না। শুধু বলছে, লকডাউনে কেন বের হলেন। এ কাজ তো আপনারা পরেও করতে পারতেন।
চেকপোস্টের কারনে তীব্র যানজট
বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের চেকপোস্টে মুভমেন্ট পাসসহ নানা বিষয় তদারকি করছে পুলিশ। যার ফলে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের চেকপোস্টের আশেপাশে যানজট সৃষ্টি হয়। লকডাউন থাকা সত্ত্বেও রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর গোলচক্করে সৃষ্টি হয়েছে যানজট। এছাড়া শাহবাগে বেলা ১১ টায় সাময়িক সময়ের জন্য যানজট সৃষ্টি হয়। এছাড়া বিজয়স্বরণী সিগনালেও দেখা যায় গাড়ির লাইন।
পায়ে হাটলে পার পাচ্ছে সবাই
লকডাউনে যানবাহন চলাচলে বিধি নিষেধ আরোপ করা হলেও পায়ে হাটা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ শিথিল রয়েছে। যার ফলে চেকপোস্টগুলোর সামনে পায়ে হেটে চলে যাচ্ছেন অনেকে। অনেকেই রিক্সা বা অন্যান্য যানবাহনে গিয়ে চেকপোস্টের সামনে পায়ে হেটে চলাচল করছে।