‘ভাত কম খেতে’ বলেননি কৃষিমন্ত্রী: মন্ত্রণালয়

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ২৬, ২০২১, ১১:২৫ পিএম

‘ভাত কম খেতে’ বলেননি কৃষিমন্ত্রী: মন্ত্রণালয়

‘ভাত কম খান’ বা ‘ভাত কম খাওয়ার পরামর্শ’-এ রকম কিছুই বলেননি কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কৃষিমন্ত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে এই ভিত্তিহীন ও অসত্য সংবাদ প্রচারিত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুলভাবে উদ্ধৃত করে প্রচারিত ‘ভাত কম খান’ বা ‘ভাত কম খাওয়ার পরামর্শ’ বিষয়ক সংবাদের প্রতি কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাকের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, মন্ত্রীর বক্তব্যকে ভুল ও আংশিকভাবে উপস্থাপন করে সম্প্রতি এরকম শিরোনামে দুয়েকটি গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে এধরনের ভিত্তিহীন ও অসত্য সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। গত রবিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরাম (বিএজেএফ) ও বণিক বার্তা আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ৫০ বছর: কৃষির রূপান্তর ও অর্জন’ শীর্ষক কৃষি সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রদত্ত মন্ত্রীর বক্তব্যের অডিও ও ভিডিও কৃষি মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত আছে। ঐ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন, বক্তব্যের রেকর্ড তাঁদের কাছেও আছে। সেই বক্তব্যের কোথাও এরকম কথা মন্ত্রী বলেননি। 

অনুষ্ঠানে বক্তব্যের এক পর্যায়ে কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি রয়েছে, তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের মানুষের খাদ্যের কষ্ট হয়নি, কোনো মানুষ না খেয়ে নেই। কোনো মানুষের মাঝে হাহাকার নেই। এমন পরিস্থিতিতে এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ হলো সকলের জন্য পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্যের যোগান দেয়া। সে জন্য বাংলাদেশকে আমরা আধুনিক কৃষিতে নিয়ে যেতে চাই, কৃষিকে লাভজনক করতে চাই। আমরা বাংলাদেশকে এগ্রোপ্রসেসিং, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে নিয়ে যেতে চাই।

মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে দানাজাতীয় খাদ্যে সফল হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানুষ জনপ্রতি প্রায় ২০০ গ্রামের মতো চাল খেয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে চাল খাওয়ার পরিমাণ জনপ্রতি প্রায় ৪০০ গ্রাম, যা ক্রমশ কমছে। এখন আমাদের লক্ষ্য হলো-পুষ্টিজাতীয় খাবার দুধ, মাছ, মাংস, ডিম, ফলমূল প্রভৃতি খাবার গ্রহণের পরিমাণ বাড়িয়ে ভাত খাওয়ার পরিমাণ আমরা কমিয়ে আনতে চাই। এটি করতে পারলে চালের ব্যবহার কমে আসবে ও জনগণ পুষ্টিসম্মত খাবারও পাবে’।

মূলত পুষ্টিজাতীয় খাবার যেমন: দুধ, মাছ, মাংস, ডিম, শাকসবজি, ফলমূল প্রভৃতি খাওয়া/গ্রহণের পরিমাণ বাড়াতে সরকারের প্রচেষ্টার কথা বলেছেন কৃষিমন্ত্রী। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত বিশেষ অঙ্গীকারের ৫ম স্থানে রয়েছে সকল মানুষের জন্য পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যে নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্য অর্জন করতে সরকার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। পুষ্টিজাতীয় খাবার যেমন: দুধ, মাছ, মাংস, ডিম, শাকসবজি, ফলমূল প্রভৃতি উৎপাদন ও সহজলভ্য করতে নিরলসভাবে কাজ করছে সরকার। পাশাপাশি, উচ্চ পুষ্টিসমৃদ্ধ ও জিংক, ভিটামিনসমৃদ্ধ চালের জাত উদ্ভাবন ও চাষেও অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। 

ইতোমধ্যে দেশে পুষ্টিজাতীয় খাদ্য উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। পুষ্টিজাতীয় খাদ্যের কোন অভাব নেই। কিন্তু অনেক মানুষের আয় সীমিত, তা দিয়ে তারা পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার কিনতে পারে না। এটিকে বিবেচনায় নিয়ে সরকার মানুষের আয়বর্ধক বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কৃষিকে আধুনিকায়ন ও লাভজনক করার মাধ্যমে গ্রামীণ বৃহৎ জনগোষ্ঠীর আয় বাড়াতে কাজ চলছে।

Link copied!