এপ্রিল ৬, ২০২৩, ১১:০৫ পিএম
দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আয় থেকে 'দ্বৈত কর' আদায়ের অবসান চেয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কে পাঠানো এক চিঠিতে বিএসইসি জানায়, তালিকাভুক্ত কোম্পানির মুনাফা থেকে ২ বার উৎসে কর আদায় করা হচ্ছে। একবার কোম্পানির কাছ থেকে আরেকবার বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে।
বিএসইসি দাবী করে এ 'দ্বৈত কর' ব্যবস্হার অবসান করা হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো আরও বেশী লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের দিতে পারবে। আর এতে করে শেয়ারবাজারে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান কর্তৃক স্বাক্ষরিত এ চিঠি গত বুধবার এনবিআর এ পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বিএসইসি মুখপত্র মো. রেজাউল করিম এ চিঠির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বিএসইসি কর্তৃক এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে তিনটি সুপারিশ করে আগামী বাজেটে এর বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়ার দাবী করা হয়।
চিঠিতে বলা হয় বর্তমানে আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, দেশেই বসবাস করেন এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ এবং অনিবাসী ব্যক্তির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ উৎসে কর আদায় করা হচ্ছে।
এছাড়া তালিকাভূক্ত কোম্পানি ও বন্ড ইস্যুয়ার কোম্পানি তার মুনাফার ওপর কর দিয়ে আসছে। লভ্যাংশ বা আয় দেওয়ার সময় আবার কর নেয়া হচ্ছে। এতেও দ্বৈত কর আদায় করা হচ্ছে।
চিঠিতে বলা হয়, কোনও কোনও ক্ষেত্রে তৃতীয় বারও কর আদায় করা হয়েছে। এমন বহুস্তর করব্যবস্হা শেয়ারবাজারের উন্নয়নের জন্য ক্ষতিকারক উল্লেখ করে একক কর ব্যবস্হা প্রবর্তন করার দাবী করেছে বিএসইসি।
বিএসইসি বলেছে শেয়ারবাজার হলো দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের উৎস। ইক্যুইটি নির্ভর কোম্পানীর ভিত্তি কমাতে শেয়ারবাজারে বৈচিত্র্য আনতে বিএসইসি কাজ করে যাচ্ছে। শেয়ারবাজারের উন্নয়ন হলে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে ব্যাংকের উপর নির্ভরতা কমবে এবং দেশে শিল্পায়নে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে।
বিএসইসি চিঠিতে মিউচুয়াল ফান্ডের আয় থেকে 'করমুক্তি' সুবিধা বাড়ানো এবং তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার-এ ব্যবধান বৃদ্ধি নিয়েও নতুন প্রস্তাব দিয়েছে।
বর্তমানে মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্জিত আয় ও বে-মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড এর ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্জিত আয় করমুক্ত রয়েছে।
বিএসইসির প্রস্তাবে এক্ষেত্রে এক লাখ টাকা পর্যন্ত আয়কে করমুক্ত হিসেবে বিবেচনা করতে অনুরোধ করা হয়।বিএসইসি'র চিঠিতে শেয়ারবাজার থেকে মূলধন উত্তোলনে উৎসাহিত করতে দেশি, বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানির জন্যও কর–সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।