সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ‘প্রত্যয়’ নামে নতুন একটি স্কিম চালু করা হয়েছে। সব স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, সরকারি বা সমজাতীয় সংস্থার কর্মীরা এই স্কিম নিতে পারবেন।
বুধবার (২০ মার্চ) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এতে এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না এবং বিদ্যমান পেনশন সুবিধা অক্ষুণ্ন থাকবে। তবে, চলতি বছরের ১ জুলাই ও তার পরে যোগ দেওয়া কর্মীদের বাধ্যতামূলকভাবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় ‘প্রত্যয়’ স্কিমে যুক্ত করা হবে।
‘প্রত্যয়’ স্কিমের মাধ্যমে কর্মীদের মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা মাসিক জমা হবে। যাদের এখনো চাকরির মেয়াদ অন্তত ১০ বছর আছে, তারা চাইলে সর্বজনীন পেনশনে যুক্ত হতে পারবেন।
দেশের সব নাগরিককে পেনশন সুবিধার মধ্যে আনতে গত বছরের আগস্টে চারটি স্কিম নিয়ে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করে সরকার। স্কিমগুলো হল ‘প্রবাস’, ‘প্রগতি’, ‘সুরক্ষা’ ও ‘সমতা’।
প্রতিটি স্কিমের জন্যই মাসিক, ত্রৈমাসিক ও বার্ষিক চাঁদা পরিশোধের সুযোগ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে চাঁদা ও পেনশনের পরিমাণ। ১৮-৫০ বছর বয়সী জাতীয় পরিচয়পত্রধারী (এনআইডি) সব বাংলাদেশি নাগরিক এই স্কিমে অংশ নিতে পারবেন।
কোন স্কিমে চাঁদা কত
বিধিমালার শুরুতেই বলা হয়েছে সমতা স্কিমের কথা। মূলত দারিদ্র্য সীমার নিচে থাকা স্বল্প আয়ের ব্যক্তি যাদের আয় বছরে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা তারা এই স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। এই স্কিমে যুক্ত হতে সর্বনিম্ন মাসিক চাঁদার পরিমাণ ১ হাজার টাকা। ১০ বছর পূর্তিতে প্রতি মাসে পেনশন পাওয়া যাবে ১ হাজার ৫৩০ টাকা করে। একইভাবে ১৫, ২০, ২৫, ৩০, ৩৫, ৪০ ও ৪২ বছর পূর্ণে পেনশনের হার বাড়তে থাকবে। কেউ ৪২ বছর চাঁদা দিলে মাসে পেনশন পাওয়া যাবে ৩৪ হাজার ৪৬৫ টাকা।
‘সুরক্ষা’ স্কিমে অংশ নিতে পারবেন অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিরা যেমন- কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেল ও তাঁতি। এই স্কিমে চাঁদা দেওয়া যাবে মাসিক ১ হাজার, ২ হাজার, ৩ হাজার কিংবা ৫ হাজার টাকা করে। ১০ বছর পূর্তিতে ১ হাজার টাকায় পেনশন হবে মাসে ১ হাজার ৫৩০ টাকা, ২ হাজার টাকায় ৩ হাজার ৬০, ৩ হাজার টাকায় ৪ হাজার ৫৯১ টাকা এবং ৫ হাজার টাকায় পেনশন পাওয়া যাবে ৭ হাজার ৬৫১ টাকা করে। ৪২ বছর পূর্ণ হলে ১ হাজার টাকায় পেনশন হবে ৩৪ হাজার ৫৬৫ টাকা, ২ হাজার টাকায় ৬৮ হাজার ৯৩১ টাকা, ৩ হাজার টাকায় ১ লাখ ৩ হাজার ৩৯৬ টাকা ও ৫ হাজার টাকায় পেনশন মিলবে ১ লাখ ৭২ হাজার ৩২৭ টাকা।
বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানরত যে বাংলাদেশি নাগরিকরা প্রবাস স্কীমের মাধ্যমে এই সুবিধায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন। এই স্কিমে মাসিক ৫ হাজার, সাড়ে ৭ হাজার এবং ১০ হাজার টাকা কিস্তি দিয়ে যুক্ত হওয়া যাবে। ১০ বছর পূর্তিতে ৫ হাজার টাকার কিস্তিতে মাসে পেনশন আসবে ৭ হাজার ৬৫১ টাকা, সাড়ে ৭ হাজার টাকায় ১১ হাজার ৪৭৭ এবং ১০ হাজার টাকায় আসবে ১৫ হাজার ৩০২ টাকা।
বিধিমালায় শেষ যে স্কিমটির কথা বলা হয়েছে সেটি হল প্ৰগতি স্কিম। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য এই স্কিম রাখা হয়েছে। এতে মাসিক ২ হাজার, ৩ হাজার বা ৫ হাজার টাকা কিস্তি দিয়ে যুক্ত হওয়া যাবে। ১০ বছর পূর্তিতে ২ হাজার টাকায় পেনশন মিলবে ৩ হাজার ৬০ টাকা, ২ হাজার টাকা কিস্তিতে ৪ হাজার ৫৯১ এবং ৫ হাজার টাকা কিস্তিতে মাসে পেনশন পাওয়া যাবে ৭ হাজার ৬৫১ টাকা।