রপ্তানিকারকদের স্বার্থে টাকার মান কমাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ১১, ২০২২, ০৭:৫৬ পিএম

রপ্তানিকারকদের স্বার্থে টাকার মান কমাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

রপ্তানিকারক ও রেমিট্যান্স প্রদানকারীদের স্বার্থ রক্ষায় ডলারের বিপরীতে টাকার ক্রমান্বয়ে অবমূল্যায়নের পথ অনুসরণ করার কথা ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এর ফলে মূল্য মূল্যস্ফীতির চাপ বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করছে অর্থনীতিবিদরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক রবিবার আন্তঃব্যাংক বিনিময় হারের অবমূল্যায়ন করেছে। এখন ডলার প্রতি টাকা ৮৬ টাকায় উন্নীত হয়েছে। কার্ব মার্কেটে বিনিময় হার অবশ্য প্রতি ডলার ৮৯.৭০ টাকা।

ডলার প্রতি ৮৭ টাকা করার পরিকল্পনা

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, রপ্তানিকারক ও প্রেরক উভয়কেই উৎসাহিত করতে টাকার বিপরীতে ডলারের ক্রমবর্ধমান মূল্যায়ন বিবেচনা করা হচ্ছে।বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়ার কারণে এবং অর্থনীতি পুনরায় চালু হওয়ার পরেই শিল্প খাত থেকে ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ চাহিদার কারণে দেশের আমদানি অর্থপ্রদান বেড়েছে। আর সতর্কতার সাথে মুদ্রাস্ফীতির চাপ পর্যবেক্ষণ করছি, যে কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্থানীয় মুদ্রার ক্রমান্বয়ে অবমূল্যায়নের কথা ভাবছে।

রবিবার বৈঠকে ডলার প্রতি ৮৭ টাকা অবমূল্যায়ন করার পরিকল্পনা করা হয় বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে। অর্থনীতির অবস্থা বিবেচনায় চলতি বছরেই ধাপে ধাপে তা বাস্তবায়ন করবে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর অবিলম্বে অবমূল্যায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক এই কর্মকর্তা আর বিলম্ব না করে প্রতি ডলারে স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন কমপক্ষে ৮৮ টাকা করার সুপারিশ করেছেন।

ডলারের যোগান বাড়ছে

চলতি অর্থবছরের সূচনার পর থেকে স্থানীয় মুদ্রার যে কোনো ধরনের তীব্র পতন ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিতভাবে বাজারে ডলার প্রবেশ করাচ্ছে। আমদানি বিল নিষ্পত্তির জন্য ব্যাংকগুলি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রায় আড়াইশ কোটি ডলার নিয়েছে। গত বছরের ১০ জানুয়ারি আন্তঃব্যাংক এক্সচেঞ্জ রেট ৮৪.৮০ টাকায় থাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত এক বছরে স্থানীয় মুদ্রা ১ টাকার বেশি কমানোর অনুমতি দিয়েছে।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয় বলেন, বিনিময় হার বাজারের ভিত্তিতে নির্ধারণ করতে হবে। বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম না কমলে এই হার চাপের সম্মুখীন হবে। তিনি বলেন, সরকার যদি বহিরাগত উত্স থেকে সফট লোন পরিচালনা করতে পারে তবে বিনিময় হারের উপর চাপ কমবে৷

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের সমকক্ষ দেশগুলো তাদের মুদ্রার উল্লেখযোগ্য অবমূল্যায়ন করেছে। রপ্তানি খাতের স্বার্থে আমাদেরও একই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

Link copied!