জুলাই ৩০, ২০২৩, ০৭:১৮ পিএম
দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর যমজ তিন ভাই-বোন পেয়েছে জিপিএ-৫। তারা জেলার বিরামপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায় যজম ভাই ও দুইবোন একসঙ্গে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তাদের এই ফলাফলে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
যমজ তিন ভাইবোন হলো- লাসার সৌরভ মুর্মু, মেরি মৌমিতা মুর্মু ও মারতা জেনিভিয়া মুর্মু। তারা দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের জোহানেস মুর্মুর সন্তান।
জানা যায়, জেলার বিরামপুর উপজেলার চন্ডীপুর গ্রামের যমজ তিন ভাইবোন লাসার সৌরভ মুর্মু, মেরি মৌমিতা মুর্মু ও মারথা জেনিভা মুর্মু বিরামপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এসএসসির ফলাফলে তারা তিনজনই জিপিএ-৫ পায়। একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করে তার বাবা স্বল্প আয় করেন। এমন অবস্থাতেও তাদের এমন সাফল্যে খুশি পরিবারসহ সকলে। বড় হয়ে দুই বোনই চিকিৎসক হতে চায়। তবে ভাইয়ের স্বপ্ন সে হবে প্রকৌশলী।
ভাই লাসার সৌরভ মুর্মু বলে, অভাবের সংসার। আমরা তিন ভাইবোন একসঙ্গে পড়ালেখা করি। পাঠ্যবই স্কুল থেকে দেওয়া হলেও নোট বই, গাইড, টেস্ট পেপার, সাজেসনসহ যাবতীয় বই একসঙ্গে তিন জনকে কিনে দেওয়ার সামর্থ্য আমাদের বাবার নেই। তাই আমরা একসেট বই নিয়ে তিনজন পড়ালেখা করেছি।
বোন মেরি মৌমিতা মুর্মু বলে, আমার বাবা বলতো যে পানির মতো তরল হয়ে ভাসো, কিন্তু ভেসে যেও না। আমরা বাবা-মায়ের কথামতো পড়ালেখা করেছি। তাদের আশা-আকঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পেরেছি। এর চেয়ে বড় আনন্দের আর কি হতে পারে।
তাদের মা সোহাগিনী হাঁসদা বলেন, আমরা তাদেরকে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছি। এখন ভালো ফলাফল করেছে, এতে আনন্দিত। তবে এখন হিমশিম খাচ্ছি। তাদের বাবার একার উপার্জনের সংসারে পাঁচ জন সদস্য। তারপর তাদের পড়ালেখার খরচ, এটি নিয়ে একটু দুঃশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি।
তাদের বাবা জোহানেশ মুর্মু বলেন, অনেক ছেলেমেয়েই ভালো জামা-কাপড়, ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যায়। কিন্তু আমার বাচ্চাদের তা দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই। এর মধ্যেই আমি সাধ্যমত চেষ্টা করেছি।
জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষকে বিভিন্ন ভাতা প্রদান করেন। যার কারণে তারা একটু সহযোগিতা পেয়েছে। এর কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীর কাছে অবশ্যই যাবে। আমরা তাদেরকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য এই সংবর্ধনা প্রদান করলাম। আগামীতে তাদের পড়ালেখার জন্য যথাসাধ্য সহযোগিতা করা হবে।