জুলাই ১৭, ২০২৪, ১১:১৩ পিএম
সারা দিন যখন সবার চোখ ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ, কাঁদানে গ্যাস (টিয়ার শেল) নিক্ষেপের দিকে, তখনই দৃষ্টির মোড় ঘুরিয়ে শনির আখড়ায় সন্ধ্যায় সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। দিনভর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ শেষে সন্ধ্যায় দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।
বুধবার (১৭ জুলাই) রাত ১০টার দিকে সংঘর্ষ আর না হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আন্দোলনকারীরা এখনও দুই দিকে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এখনও বন্ধ রয়েছে যান চলাচল।
স্থানীয় লোকজন জানান, পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যেই বিক্ষোভকারীরা শনির আখড়ার কাজলা এলাকায় হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কোটা বাতিলের দাবিতে ‘কমপ্লিট শার্টডাউন’ আগামীকাল
এদিকে সন্ধ্যায় ওই এলাকায় সংঘর্ষের সময় পুলিশের শটগানের গুলিতে আহত ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেলে আনার তথ্য জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া। আহতদের মধ্যে দুই বছর বয়সের এক শিশুও রয়েছে।
আহতদের পরিচয়- ইরান, সোহাগ, বাবু মিয়া ও তার শিশুপুত্র রোহিত মিয়া এবং স্কুলছাত্র মাহিম আহমেদ। আহত ব্যবসায়ী বাবু মিয়া বলেন, “আমি দনিয়া এলাকায় শিশুসন্তান রোহিতকে নিয়ে বাসার ফটকে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন পুলিশের ছোড়া ছররা গুলি আমার ও আমার ছেলের গায়ে এসে লাগে।”
আহত স্কুলছাত্র মাহিম আহমেদের বাবা মোহাম্মদ আলী বলেন, “সন্ধ্যায় কোচিং শেষ করে আমি বাসায় ফিরছিলাম। তখন ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে পড়ে যাই। এ সময় পুলিশের ছররা গুলিতে আমার ছেলে আহত হয়।
এর আগে বুধবার সকাল ১০টার দিকে শনির আখড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে কোটা আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা এই মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। সন্ধ্যায় অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের পুলিশ ছত্রভঙ্গ করতে গেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এরপর দু’পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
রাত আটটার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বলেন, “শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের লোকজন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছিল। সন্ধ্যায় তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। পুলিশের গুলিতে আহতের খবর জানা নেই।”
রাত ১১টার দিকে ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি র্যাব ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা যাত্রাবাড়ী থানার আশপাশে অবস্থান নিয়ে আছেন। অন্যদিকে কাজলা এলাকায় আন্দোলনকারীরা অবস্থান করছেন। ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে এখন পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।