মার্চ ৩১, ২০২৪, ০২:৩৮ পিএম
কারও শিবিরসংশ্লিষ্টতা থাকলে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার চান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার আন্দোলনে রত শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, যেসব শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কার্যক্রমে যুক্ত থাকার অভিযোগ আসছে তাদের ঘটনাটি বুয়েটের বাইরে হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আমাদের কাছে সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণ নেই।
রোববার (৩১ মার্চ) ছাত্রলীগের প্রতিবাদ সমাবেশের জবাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, অভিযোগ আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তাদের সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার লিখিত আহ্বান জানাই। এটি আমাদের আগের একটি আন্দোলনের অন্যতম দাবি ছিল।
তারা আরও বলেন, অতি সম্প্রতি আমরা দেখতে পাই মিডিয়ায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন তাদের বুয়েটে কার্যক্রম আছে। কোনো প্রমাণ ছাড়া এ ধরনের বক্তব্যের আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। একই সঙ্গে যদি কারো শিবিরের কোনো কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার যথাযথ প্রমাণ পাওয়া যায়- আমরা সেক্ষেত্রে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
রাজনীতিমুক্ত বুয়েট গড়ার আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীরা বলেন, ইন্টারভাল ১৮ এর ফেসবুক সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে বিবৃতি দেওয়া হয় যা বুয়েট সাংবাদিক সমিতির ফেসবুক পেইজ থেকেও প্রচার করা হয়। আদালতে বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন আছে এবং এই বিচার প্রক্রিয়ার রায় সাপেক্ষে যদি এমন কোনো শিক্ষার্থীর শিবির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায় আমরা তাৎক্ষণিক তাদের বহিষ্কারের দাবি জানাবো।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা তুলে ধরেন, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর আবরার ফাহাদ হত্যার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছাত্ররাজনীতির ব্যাপারে বুয়েটের আভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্তে বুয়েটের স্বাতন্ত্র্যকে স্বীকৃতি দিলেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বুঝেটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের চাওয়াকে সম্মান করছে না ও ২০২২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগ নেতা বুয়েটে সমাবেশ বা মিছিল করে হামলার হুমকি দেয়।
বুয়েট ক্যাম্পাসে আবারও ছাত্র রাজনীতি ফিরিয়ে আনার নানারকম উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের সামনে বলেন, ‘ক্রমাগত অসন্তোষ এখন আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। শুধু একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস চাওয়ার দাবি থেকেই এই অসন্তোষ আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। তাই আমরা সবাইকে ভুল প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হতে আহ্বান জানাচ্ছি।’
তারা জানান, আমাদের ক্যাম্পাসের রাজনীতিমুক্ত থাকা, অপশক্তির কবল থেকে মুক্ত থাকা এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তা শিক্ষার্থীরা পেলে আমরা সব ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অনতিবিলম্বে আমাদের একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরে যাবো। এরই মধ্যে আমরা আমাদের পরীক্ষাগুলো রিশিডিউলের আবেদন জানিয়েছি।
হিজবুত তাহরীর বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, হিজবুত তাহরীর নিয়ে কথা উঠেছে। এটি কোনো রাজনৈতিক দল না। বরং নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন। তাদের কর্মকাণ্ড আমরা ক্যাম্পাসে দেখতে পাই বহিরাগতদের (সিসি ফুটেজ অনুযায়ী) লাগানো বিভিন্ন পোস্টার, মেইল বা প্রচারপত্র প্রভৃতির ভিত্তিতে। তাদের পরিচয় সম্পর্কে আমরা স্পষ্ট নই।
তারা আরও বলেন, আমাদের ইন্সটিটিউশনাল মেইলে হিজবুত তাহরীর সংক্রান্ত মেইল দেখার পর অনতিবিলম্বে সর্বপ্রথম ডিএসডব্লিউ স্যারকে ভার্চুয়ালি এই মর্মে ইনফর্ম করা হয়, আমাদের আন্দোলনরত এই শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেই। এ ব্যাপারে ডিএসডব্লিউ স্যারের কাছে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান করা হয়েছে। পরবর্তীতে ভিসি স্যারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ ব্যাপারে অগ্রগতি জানতে চাওয়া হলে স্যার জানান, এ ব্যাপারে বুয়েট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এর আগেও বিগত ব্যাচের শিক্ষার্থীদের এদের বিরুদ্ধে পুলিশে জানানোর রেকর্ড আছে। নিঃসন্দেহে আমরা হিজবুত তাহরীরের বিপক্ষে এবং এই ধরনের অপশক্তির উত্থান যেন বুয়েটে না হয় এজন্য আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।