জুন ২, ২০২৪, ০৪:৪৮ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকায় এক ছাত্রী ও তার সহপাঠীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের একদল কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল শাখার ওই কর্মীদের শাস্তি চেয়ে রোববার (২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী।
লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী বলেন, “গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তিনি ও তার সহপাঠী কার্জন হল এলাকায় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সামনে পুকুরপাড়ে বসে পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এ সময় একদল শিক্ষার্থী তাদের দিকে এগিয়ে আসে এবং তাদের পরিচয় জানতে চান। মৌখিকভাবে তারা নিজেদের পরিচয় দেন। এরপর তার সঙ্গে থাকা সহপাঠী নিজের আবাসিক হল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র দেখান। এরপরও ওই শিক্ষার্থীরা তাদের ওই স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য করেন। এ সময় ওই শিক্ষার্থীদের একজন ভুক্তভোগী ছাত্রীর চরিত্র নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। তার সহপাঠী এর প্রতিবাদ করায় ওই শিক্ষার্থীরা তার সহপাঠীকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। এমন অবস্থায় পাশে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থী তালহা জুবায়ের এসে পরিস্থিতি সামাল দেন এবং সবাইকে চলে যেতে বলেন।”
ভুক্তভোগী ছাত্রী আরও বলেন, “আমরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় ৪-৫ জনের একটি দল দৌড়ে এসে আমার সহপাঠীকে মারতে শুরু করেন। এ সময় আমিও আঘাত পাই। আমার চশমা ভেঙে যায়। ঘটনা দেখে আশপাশ থেকে অনেকেই এগিয়ে আসেন এবং আমাদের বাঁচানোর চেষ্টা করেন। খুব বেশি লোকসমাগম হলে ওই শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে শহীদুল্লাহ্ হল এলাকায় ঢুকে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শ্লীলতাহানি, শারীরিক নির্যাতন ও অসদাচরণের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনার শিকার হওয়ায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
হামলাকারীদের ছয়জনকে শনাক্ত করেছেন ওই ছাত্রী। লিখিত অভিযোগে তাদের নাম উল্লেখ করেছেন তিনি। তাদের মধ্যে চারজন প্রথম বর্ষের আর বাকি দুজন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তারা সবাই ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলে থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্তরা সবাই হল শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ঘটনার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলেও তারা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের (এসএম হল) ছাত্র তালহা জুবায়ের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ভুক্তভোগী ছাত্রীর ব্যাখ্যা ও প্রত্যক্ষদর্শী তালহার বক্তব্য প্রায় একই রকম।
লিখিত অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ইমাউল হক সরকার জানান, “অভিযোগটি তিনি পেয়েছেন। প্রক্টরকে বিষয়টি জানাবেন। এরপর এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ বলেন, “এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবে৷ সত্যতা পাওয়া গেলে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷”