বুয়েটে ছাত্রলীগের গোপন মিটিং, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ২৯, ২০২৪, ০৪:০৯ পিএম

বুয়েটে ছাত্রলীগের গোপন মিটিং, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) গোপনে ছাত্রলীগের মিটিংয়ের ঘটনায় ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধসহ ছয় দফা দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের এই দাবির মান্যতা না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন বিক্ষোভকারীরা। পরে মাইকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন বুয়েটের উপাচার্য (ভিসি) সত্যপ্রসাদ মজুমদার। এ সময় প্রথম তিনটি দাবি মেনে নিলেও চতুর্থ দাবিটির জন্য সাতদিন সময় প্রার্থনা করেন তিনি। পরক্ষণেই শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ‘ভূয়া, ভূয়া’ শ্লোগান ওঠে এবং তারা জোরালোভাবে তাদের অবস্থান তুলে ধরেন।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসব দাবি তোলা হয়।  কিন্তু চতুর্থ দাবি মানার জন্য সময় না দিয়েই শিক্ষার্থীরা ভিসির উদ্দেশে ‘ভুয়া, ভুয়া’ শ্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সমস্বরে তারা বলতে থাকেন, ‘এই সময়ের মধ্যে যদি কোনো (অঘটন) ঘটে যায়, তাহলে তার দায়িত্ব কে নেবে?’

ভিসি সত্যপ্রসাদ মজুমদারকে ‘ভুয়া, ভুয়া’ শ্লোগান দিতে দিতেই শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান। দুপুর আড়াইটার দিকে বুয়েটের শহীদ মিনার চত্বরে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০১৯ সালে ৭ অক্টোবর বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যার পর থেকেই ক্যাম্পাসটিতে ছাত্রলীগসহ সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ। কিন্তু প্রশাসনের সহায়তায় শিক্ষার্থীদের চোখে ধূলা দিয়ে গত ২৮ মার্চ রাত তিনটার দিকে ক্যাম্পাসে গোপন মিটিং করেছে বুয়েট ছাত্রলীগ। এই মিটিং বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি:
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে ২৮ মার্চ মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক ২১তম ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বিকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও হলের সিট বাতিল করতে হবে।

২. ইমতিয়াজের সঙ্গে বুয়েটের বাকি যেসব শিক্ষার্থী জড়িত ছিলেন তাদের বিভিন্ন মেয়াদে হল ও টার্ম বহিষ্কার করতে হবে।

৩. রাজনীতি সংশ্লিষ্ট বহিরাগত যারা ক্যাম্পাসে ঢুকেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, তারা কেন ও কীভাবে প্রবেশের অনুমতি পেলেন- এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট জবাবদিহি দিতে হবে বুয়েট প্রশাসনকে।

৪. ১ ও ২ নম্বর দাবি কাল শনিবার সকাল নয়টার মধ্যে বাস্তবায়ন করা না হলে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) পদত্যাগ চায়।

৫. ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে বহিরাগতদের প্রবেশের কারণে শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এর প্রতিবাদ হিসেবে আগামীকাল শনিবার ও পরদিন রোববার টার্ম ফাইনালসহ সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করা হবে।

৬. আন্দোলনরত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো রকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে না, এই মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

Link copied!