জাকসু ভবন। ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘ ৩৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে ভোটের তারিখ রাখা হয়েছে ৩১ জুলাই।
বুধবার রাত পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে জাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান।
তারিখ ঘোষণার পরপরই জাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মনিরুজ্জামান এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।
উপাচার্য বলেন, জাকসুর গঠনতন্ত্রের ৮ এর খ. ধারা অনুযায়ী আগামী ৩১ জুলাই সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে।
জুলাই অভ্যুত্থানে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেসব শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন আগামী ২৯ জুনের মধ্যে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক বিচার নিশ্চিতের ঘোষণা দেন উপাচার্য।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ১২ মে জাকসু নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। ওইদিনই খসড়া আচরণবিধি প্রকাশ করা হবে।
খসড়া ভোটার তালিকার বিষয়ে আপত্তি গ্রহণ এবং খসড়া আচরণবিধির ওপর মতামত দেওয়ার শেষ তারিখ ২১ মে।
এরপর ৩০ জুন চূড়ান্ত হালনাগাদ ভোটার তালিকা এবং আচরণবিধি প্রকাশ করা হবে।
নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহীরা ১ থেকে ৩ জুলাই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে।
মনোনয়নপত্র যাচাই–বাছাইয়ের পর ৯ জুলাই খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। ১৪ জুলাই পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার সুযোগ থাকবে। পরদিন প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা। এরপর ৩১ জুলাই ভোট হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মোহাম্মদ সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুর রব, জাকসু পরিবেশ পরিষদের সদস্য সচিব বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে জাকসুর সার্বিক নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে ‘পরিবেশ পরিষদ: জাকসু নির্বাচন ২০২৫’-এর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি এবং ক্রিয়াশীল শিক্ষার্থী সংগঠনের প্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভা হয়।
দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার বৈঠক শেষে বুধবার ভোর সাড়ে ৫টায় জাকসুর তফসিল ঘোষণার বিষয়ে সম্মত হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠার পরে এখন পর্যন্ত মোট ৮ বার জাকসু নির্বাচন হয়েছে।
সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯২ সালে বিএনপি সরকারের সময়ে। সেবার সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন মাসুদ হাসান তালুকদার এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হন শামসুল তাবরীজ।
১৯৯৩ সালের ২৯ জুলাই ছাত্ররা শিক্ষক ক্লাবে হামলা চালালে প্রশাসন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ ভেঙে দেয়। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি।