জুলাই ১৬, ২০২৪, ০৯:২৬ এএম
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে গতকাল সোমবার মধ্যরাতে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ‘প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ইঙ্গিত ছাড়া’ ঘটতে পারে বলে মনে করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ চত্বরে চলমান সর্বজনীন পেনশন তহবিলের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে এমন ভাষ্য উঠে এসেছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, আহতদের চিকিৎসার ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহন করা, বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া, আর কেউ যাতে আহত না হন সেটা নিশ্চিত করা ও গতকাল সোমবারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না করার দাবি জানান শিক্ষকরা।
সোমবারের ঘটনা উল্লেখ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষক মো. শামছুল আলম বলেন, “আমাদের সহকর্মীরা যে অবস্থায় ছিল, যেকোনও অঘটন ঘটে যেতে পারতো। প্রশাসন বলতে কিছুই ছিল না। আমি এ ধরণের প্রশাসন দেখিনি। গতকাল (সোমবার) ছিল নজিরবিহীন। তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।”
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মানস চৌধুরী বলেন, “সোমবারের এই পরিস্থিতি জন্য প্রশাসন দায়ী। ক্যাম্পাসে কোনও পিকআপ ঢোকার কথা ছিল না।”
অবস্থান কর্মসূচি শেষে কালো কাপড় পরে জাবি শিক্ষকরা মৌন মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে আসেন। এ সময় নতুন প্রশাসনিক ভবনে আজ জরুরি সিন্ডিকেট সভা চলছিল।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর সোমবার মধ্যরাতে হামলা চালায় জাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাবিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার বিচার দাবিতে শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান করছিল। মধ্যরাতে জাবি শাখা ছাত্রলীগ ও বহিরাগতরা সেই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। তখন আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আশ্রয় নেয়। পরে সেখানে ঢুকে তাদের মারধর করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
একপর্যায়ে বিভিন্ন হল থেকে কয়েক শ শিক্ষার্থী বেরিয়ে এসেে উপাচার্যের (ভিসি) বাসভবন ভাঙচুর করে। সেই সময় পুলিশ-ছাত্রলীগ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও ছররা গুলি ছোড়ে। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জাবির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক খন্দকার লুৎফুল এলাহী ও ৪ সাংবাদিক। আহত ও গুলিবিদ্ধরা এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এর আগে রাত ১২টার দিকেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠি হাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। সেই সময় বহিরাগতসহ ছাত্রলীগের দেড় শতাধিক নেতাকর্মী মিলে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।