মে ৭, ২০২৫, ০৩:৩৮ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) উপাচার্য ডা. শুচিতা শরমিনের অপসারণের দাবিতে তৃতীয় দিনের মত অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে ভিসির অপসারণের দাবিতে তার বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা।
বুধবার, ০৭ মে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর দেড়টার দিকে তারা বিক্ষোভ মিছিল করে ভিসির বাসভবনের সামনে জড় হন এবং গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ সময় বাসভবনের সব সেবা বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণাও দেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, নানা সময়ের শিক্ষার্থীরা দফায় দফায় বিভিন্ন দাবি তুললেও দীর্ঘ ৯ মাসেও শিক্ষার্থীদের দেওয়া কোনো দাবি বাস্তবায়ন করতে পারেননি উপাচার্য। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ভিসির অপসারণের দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া পূর্বনিধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। আন্দোলনে সব শিক্ষার্থী একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যহত থাকবে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক শাটডাউন দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে ক্লাস ও পরীক্ষা চালু রয়েছে।
গত ৪ মে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান আন্দোলন সহ সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুচিতা শরমিন। এসময় উপাচার্য সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তঅনুযায়ী শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের নামে যে মামলা ও জিডি হয়েছে তা শিক্ষার্থীদের মুচলেকার মাধ্যমে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
তিনি জানান, তবে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মহসিন উদ্দিনের বিষয়ে হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে। একই সাথে ফ্যাসিস্ট সরকারের সমর্থক শিক্ষক কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতে ও ব্যবস্থা নিতে এক সদস্য বিশিষ্ট একজন সিন্ডিকেট সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ক্যানসার আক্রান্ত শিক্ষার্থী জেবুন্নেছা হক জিমির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে উপাচার্য বলেন, ওই শিক্ষার্থীর আর্থিক আবেদনটি কেন উপাচার্য পর্যন্ত পৌঁছায়নি সে বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
একই দিন ভিসির সংবাদ সম্মেলন শেষে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা জানান, অতি দ্রুত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে অপসারণ করার মধ্য দিয়ে একজন গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য নিয়োগ দিতে হবে। তারা বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রমকে গতিশীল করার জন্য ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।
শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি শুচিত্রা শরমিন যোগদানের পর থেকে শিক্ষার্থীরা প্রথমে ২২ দফা ও পরে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের দাবি তুললে তিনি তা কর্ণপাত করেননি। উল্টো শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা ও জিডি করেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ক্যানসার আক্রান্ত হলে ভিসি বরাবর আর্থিক সহায়তার আবেদন করলেও তা স্বাক্ষরের অভাবে অনুমোদন পায়নি। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা মনে করছেন ভিসির অপসরণ জরুরি। তাই তারা ভিসির অপসারণের এক দফা দাবি জানিয়েছেন।