কাল থেকে শুরু রাবির ভর্তি যুদ্ধ

রাবি প্রতিনিধি

মার্চ ৪, ২০২৪, ০৮:১৬ পিএম

কাল থেকে শুরু রাবির ভর্তি যুদ্ধ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে। ‘সি’ ইউনিটের (বিজ্ঞান) ভর্তি পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে শুরু হওয়া এই পরীক্ষা আগামী ৭ মার্চ পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন চার শিফটে এই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এবার তিনটি ইউনিটে কোটাবাদে ৩ হাজার ৯০৪টি আসনের বিপরীতে মোট ১ লাখ ৭৩ হাজার ১১৭টি আবেদন জমা পড়েছে। এই হিসাবে সবগুলো আসনের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ৪৪ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়েরর জনসংযোগ দপ্তর জানায়, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে বিশেষ কোটাসহ মোট আসন সংখ্যা ৪ হাজার ৪৩৮টি। এই আসনের বিপরীতে মোট ১ লাখ ৮৫ হাজার ৬৮০টি চূড়ান্ত আবেদন জমা হয়েছে। এ ইউনিটে ৭৪ হাজার ৭৮৫টি, বি ইউনিটে ৩৪ হাজার ৫৪১টি এবং সি ইউনিটে ৭৬ হাজার ৩৫৪টি চূড়ান্ত আবেদন সম্পন্ন হয়েছে। এবার একক আবেদনকারীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৭৭টি। এর মধ্যে পুরুষ আবেদনকারীর সংখ্যা ৯০ হাজার ৪৫৬টি ও নারী আবেদনকারীর সংখ্যা ৬৪ হাজার ৫২১টি। তবে কোটা বাদে আবেদনকারীর সংখ্যা এ ইউনিটে ৬৯ হাজার ৫২৭টি, বি ইউনিটে ৩২ হাজার ৬১৪টি ও সি ইউনিটে ৭০ হাজার ৯৭৬টি।

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের যে ৮ নির্দেশনা
১. অনলাইনে প্রদত্ত দুই পৃষ্ঠার (প্রথম পৃষ্ঠা পরীক্ষার্থীর ও দ্বিতীয় পৃষ্ঠা বিশ্ববিদ্যালয়ের কপি হিসাবে নির্ধারিত) প্রবেশপত্র অবশ্যই এ-৪ সাইজের দুটি পৃথক অফসেট কাগজে কালার প্রিন্ট করতে হবে।
২. পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই তার প্রবেশপত্রে উল্লেখিত নির্দিষ্ট কক্ষের নির্ধারিত আসনে পরীক্ষা দিতে হবে।
৩. পরীক্ষা আরম্ভ হওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পূর্বে প্রার্থীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হতে হবে। পরীক্ষা আরম্ভ হওয়ার ১৫ মিনিট পরে কোন প্রার্থীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
৪. উত্তরপত্রে সব ধরনের লেখার কাজে কালো কালির বল পয়েন্ট কলম ব্যবহার করতে হবে। পেন্সিলের ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
৫. ভর্তি পরীক্ষার সময় প্রার্থীকে উল্লেখিত দুই পৃষ্ঠার প্রবেশপত্র এবং উচ্চমাধ্যমিকের মূল রেজিস্ট্রেশন কার্ড অবশ্যই সঙ্গে আনতে হবে। পরীক্ষার হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রবেশপত্রদ্বয়ের প্রত্যেকটিতে এমনভাবে স্বাক্ষর করবেন যেন অর্ধেক অংশ ছবির ওপর থাকে। স্বাক্ষরিত প্রবেশপত্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের কপিটি দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক সংগ্রহ করবেন। পরীক্ষার্থীর কপি পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য প্রার্থীকে অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে।
৬. ক্যালকুলেটর, মেমোরি যুক্ত ঘড়ি, মোবাইল ফোন, ব্লুটুথ বা টেলিযোগাযোগ করা যায় এরূপ কোনো ইলেকট্রনিক যন্ত্রসহ পরীক্ষার হলে প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষার হলে কোনো পরীক্ষার্থীর নিকট এরূপ কিছু পাওয়া গেলে তাঁর ভর্তির আবেদন বাতিল করা হবে।
৭. পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীর মুখমণ্ডল ও দুই কান খোলা থাকতে হবে।
৮. বিভিন্ন স্তর থেকে সংগৃহীত আবেদনকারীর ছবি বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশনে ব্যবহার করা হবে। ভেরিফিকেশনে কোনো ধরনের অসঙ্গতি দেখলে ওই আবেদনকারীর আবেদন বাতিল করা হবে।

যানবহনের জন্য নির্দেশনা:
৫-৭ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো শহরের নির্ধারিত স্থান থেকে সকাল সোয়া সাতটার দিকে ক্যাম্পাস অভিমুখে ছেড়ে আসবে। ৫ ও ৬ মার্চ ক্যাম্পাস থেকে বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে ও ৭ মার্চ বেলা পৌনে তিনটার দিকে ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যাবে। সকাল সাড়ে সাতটার পর ক্যাম্পাসে কোনো প্রকার ভারী যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। ব্যক্তিগত গাড়ি ও অন্যান্য যানবাহন কাজলা ও বিনোদপুর গেট দিয়ে প্রবেশ করে মেইন গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবে। কৃষি ও চারুকলা অনুষদে যাওয়ার ক্ষেত্রে মন্নুজান হল- বেগম খালেদা জিয়া হল-স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন খুঁত বাগান সংলগ্ন রাস্তাটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে  শারীরিক প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা সব রাস্তা ব্যবহার করতে পারবে।

ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে  প্রশাসনের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে উল্লেখ করে উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘পরীক্ষা চলাকালে শুধু অভিভাবকদের অপেক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ১১টি ওয়াটার প্রুফ টেন্ট স্থাপন করা হয়েছে। সবগুলো টেন্টে অভিভাবকদের বসার জন্য ২০০টি করে চেয়ার থাকবে। পরীক্ষা দিতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ইতিমধ্যে নগরীতে আসা শুরু করেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আবাসিক হলগুলোতে পরীক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছাত্রী জিমনেসিয়ামে মহিলা অভিভাবকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া পশ্চিমপাড়ায় আবাসিক এলাকায় ৯০ নম্বর বাসায় অভিভাবকদের থাকার সীমিত ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্র পরিচালিত একটি মেডিকেল টিম গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন পরিচালিত দুই সদস্যের একটি মেডিকেল টিম ও চারটি অ্যাম্বুলেন্সসহ সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সহায়তা প্রস্তুত থাকবে।’

উল্লেখ্য, এবারের স্নাতক প্রথম বর্ষের (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা ৫-৭ মার্চ পর্যন্ত  ক, খ ও গ তিনটি ইউনিটে অনুষ্ঠিত হবে। ৫ মার্চ বিজ্ঞান অনুষদ তথা গ ইউনিট, ৬ মার্চ কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদ তথা ক ইউনিট এবং ৭ মার্চ ব্যবসায় প্রশাসন তথা খ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

Link copied!