ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৪, ০৭:১৬ পিএম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রসায়ন বিভাগের এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত একই বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল মতিনকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪৮নং বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ আলী গণমাধ্যমকে জানান, দুটি তদন্ত কমিটির সদস্যরাই ওই শিক্ষককে চাকরি থেকে অপসারণ করার সুপারিশ করেছে। সে অনুযায়ী সিন্ডিকেট চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুল মতিনের বিরুদ্ধে গত ৩১ জানুয়ারি প্রক্টর বরাবর অভিযোগপত্র দেন এক ছাত্রী।
ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তুলে ধরে গত ৩১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতারকে চিঠি দেন এক ছাত্রী।
অভিযোগপত্রে ছাত্রীটি লিখেন, ‘আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বর্তমানে আমি জৈব রসায়ন শাখায় মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকের তত্ত্বাবধানে মাস্টার্সের থিসিস করছি। থিসিস চলাকালে আমি আমার সুপারভাইজার কর্তৃক যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হয়েছি। থিসিস শুরু হওয়ার পর থেকে আমার সাথে তিনি বিভিন্ন যৌন হয়রানিমূলক আচরণ করেন।’
ছাত্রীটি উপাচার্য বরাবর লেখা চিঠিতে আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘জোর করে হাত-পা চেপে ধরা, শরীরের বিভিন্ন অংশে জোরপূর্বক ও অতর্কিত স্পর্শ করা, অসংগত ও অনুপযুক্ত শব্দ ব্যবহার করেছেন। কেমিক্যাল আনাসহ আরও বিভিন্ন বাহানায় তিনি আমাকে তার রুমে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক জাপটে ধরতেন।’
ওই ছাত্রী বলেন, ‘গত ৬ জানুয়ারি সকাল ১০টা ১০ মিনিটে আমি ল্যাবে একা কাজ করা অবস্থায় তিনি আমাকে জোর করে জড়িয়ে ধরেন। এরপর ১৩ জানুয়ারি নিজকক্ষে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এ ঘটনা প্রকাশ না করতে ওই শিক্ষক তাকে ও তার সহপাঠীকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়েছেন। এ অবস্থায় ওই ছাত্রী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন। তার পক্ষে আর এই গবেষণাগারে থিসিসের কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া সম্ভব নয় বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত অধ্যাপককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীসহ কিছু সংগঠন। বহিষ্কারের দাবিতে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টারও লাগানো হয়। এই প্রেক্ষিতে ১ ফেব্রুয়ারি ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ।
পরে ঘটনা তদন্তে দুটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ধর্ষণচেষ্টার ঘটনার সত্যতা পাওয়াই সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষককে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।