জুন ৩০, ২০২২, ০৪:১১ পিএম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ সালাম-বরকত হলের খেলার মাঠ সংলগ্ন উত্তর পাশের খোলা স্থানে দোকান নির্মাণকে কেন্দ্র করে এস্টেট অফিস ও হল কর্তৃপক্ষের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি দেখা দিয়েছে । প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়া গতকাল বুধবার স্থাপনা নির্মাণের এক পর্যায়ে এস্টেট অফিস থেকে আপত্তির মুখে পরে নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে এবং প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার জেনারেটর বাজার অভিমুখী রাস্তার উত্তর পাশে দোকান নির্মাণের কাজ শুরু করেন সালাম- বরকত হল প্রশাসন। কার্যক্রম চলাকালীন এস্টেট অফিসের কর্মকর্তারা এসে হলের আওতাধীন নয় বিধায় সেখানে কাজ বন্ধ করার অনুরোধ জানায়। এস্টেট অফিসের দাবি অনুযায়ী এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা যা এস্টেট অফিস দেখাশোনা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী এখানে দোকান নির্মাণের সুযোগ না থাকায় যাবতীয় নির্মাণ সামগ্রী উঠিয়ে নিতে বলে এস্টেট অফিস। তবে এসময় শহীদ সালাম-বরকত হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে এস্টেট অফিসকে বাঁধা দেন। এমনকি শিক্ষার্থীরা দোকান নির্মাণ করার ক্ষেত্রে হল প্রভোস্টের( সাবেক প্রভোস্ট আলি আজম তালুকদারের) অনুমোদন সম্বলিত একটি ডকুমেন্ট দেখান এবং কাজ বন্ধ হবে না বলে জানান। একপর্যায়ে বাঁধার মুখে এস্টেট অফিসের লোজকজন স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এসময় আরো জানা যায় ইতিপূর্বে সালাম বরকত হল সংলগ্ন পূর্ব পাশের দোকানগুলোতে ভিটি উঁচু করার জন্য পশ্চিম পাশে সেই খোলা জায়গা থেকে মাটি আনার চেষ্টা করে। তখনও এস্টেট অফিস বাঁধা দিলে পরে অন্যত্র থেকে মাটি আনা হয়।
এস্টেট অফিস শাখা সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা আছে। জায়গাটি হল প্রশাসনের অধীনে নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি যা এস্টেট অফিস দেখাশোনা করে। তাছাড়া আলবেরুনী হল সংলগ্ন খেলার মাঠ সংস্কার শুরু হবে শীঘ্রই। এখানে দোকান নির্মাণ হলে মাঠের সৌন্দর্য ও পরিবেশ নষ্ট হবে। সেজন্য অপরিকল্পিতভাবে এখানে দোকান নির্মাণের কোন সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে শহীদ সালাম বরকত হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুন্ডুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুদিন হলে আমি হলে প্রভোস্ট হিসেবে নতুন দায়িত্ব পেয়েছি। হলের ওয়ার্ডেন ও শিক্ষকদের কাছে জেনেছি এখানে দোকান নির্মাণের ব্যবস্থা আছে। সেজন্য আমরা বরাদ্দ দিয়েছিলাম। তবে এস্টেট অফিসের আপত্তির মুখে উপাচার্যকে তা জানিয়েছিলাম। কাজ আপাতত স্থগিত আছে। সম্ভবত কাজ বন্ধ রাখা লাগবে।
শিক্ষার্থীদের ডকুমেন্ট দেখানোর ব্যাপারে তিনি জানান, শিক্ষার্থীরা তাদের চাহিদার প্রেক্ষিতে এটা করেছে। প্রশাসনের থেকে আমি নিজে কোন অনুমোদন নেয়নি। শিক্ষার্থীরা কোন ডকুমেন্ট দেখিয়েছে আমি জানিনা।
কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বললে তারা জানান, অপরিকল্পিতভাবে খেয়াল খুশিমত খালি জায়গা পেলে স্থাপনা নির্মাণের এই প্রবণতা থেকে অন্তত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বেরিয়ে আসা উচিত। এখানে একটা খেলার মাঠ নির্মাণ করা হবে। তাই সৌন্দর্যের বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েই পরিকল্পিত ভাবে কাজ করা দরকার।
এ ব্যাপারে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম ও নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্বে নিযুক্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক রাশেদা আখতারের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে ।