করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে শিক্ষার্থী প্রবেশ না করলেও চোরের প্রবেশ রোধ করা যায়নি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের তিনটি রুমে চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোররা শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় অনেক জিনিসপত্র নিয়ে গেছেন। গত শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা শিক্ষার্থীদের। এর আগেও ১২ টি রুমে এমন চুরির ঘটনা হয়।
সূত্র জানায়, করোনা মহামারির কারণে গত বছরের মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হল। এই বন্ধের মধ্যে শিক্ষার্থীদের কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে প্রয়োজন সাপেক্ষে হলে প্রবেশ করতে হয়। বিনা প্রয়োজনে যেখানে হলে প্রবেশ করা যায় না, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের তিনটি রুমে চুরির ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, হলের দক্ষিন ব্লকের ৩০৮,৩০৯,৫০৮ নম্বর রুমে এ চুরির ঘটনা ঘটে। চোর শিক্ষার্থীদের লকার ভেঙ্গে ল্যাপটপ, টিভি, জুতা, কাপড়সহ অনেক জিনিসপত্র নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। ৩০৮ নম্বর রুমে থাকেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক আল আমিন রহমান। এছাড়া ৩০৯ নম্বর রুমে হল সংসদের জিএস মেহেদী হাসান শান্ত ও ৫০৮ নম্বর রুমে সাধারণ শিক্ষার্থীরা থাকেন ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল আমিন রহমান বলেন, ‘আমি গতকাল রাত ৮টার দিকে হলে প্রবেশ করেছি। আজ দুপুরে রুমে গিয়ে দেখি তালা ভাঙ্গা। আমার রুমের লকার ভেঙ্গে লেপটপ, জুতা, কাপড় সহ অনেক জিনিস নিয়ে গেছে। অন্যদের রুমেও একই ঘটনা।
এদিকে, চুরির ঘটনায় হলের কক্ষ পরিদর্শন করেছেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি এই বিষয় সম্পর্কে অবগত আছি। এ ঘটনায় একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটি এখন বিষয়টি দেখবে।’
অপরদিকে হল প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, হলের প্রবেশের সময় সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। কিন্তু কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ক সম্পাদক আল আমিন রহমান প্রবেশ করেছেন রাত ৮টায়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেখানে দুপুর ৪টার পর হলে প্রবেশ করতে পারে না সেখানে রাত ৮টায় কীভাবে ছাত্রলীগের এক নেতা প্রবেশ করে তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, হল কর্তৃপক্ষের অসাবধানতার কারণে এ চুরির ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। রাত ৮টায় কীভাবে একজন ছাত্রলীগ নেতা হলে প্রবেশ করে এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান কে প্রশ্ন করলে তিনি জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, আমাদের অফিস টাইমের মধ্যে ছাত্ররা হলে আসতে পারে। এর বাইরে আসার সুযোগ নাই। যে ছাত্ররা আসে তারা সংশ্লিস্ট শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করে। সেই ছাত্রের সাথেও একজন অফিস থেকে একজন লোক থাকেন।’
এ বিষয়ে ওই ফ্লোরের দায়িত্বে থাকা আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ বদরুল হাসান বলেন, ছুটির দিনে আমরা হলে প্রবেশ এলাও করি না। এছাড়া প্রবেশ করা যায়। সে কীভাবে ছুটির দিনে রাতে রুমে ঢুকলো আমি জানি না।’