করোনা মহামারীতে স্বেচ্ছাসেবী মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট করোনা নমুনা নেয়া সহ বিভিন্ন কাজে এগিয়ে আসে। স্বেচ্ছাসেবী মেডিকেল টেকনোলজিষ্টদের উপহার হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির নির্বাহী আদেশে ১ম ধাপে ১৮৩ জন ও ২য় ধাপে ৫৭ জন মেডিকেল টেকনোলজিষ্টদের সরাসরি রাজস্ব খাতে নিয়োগ দেয়া হয়। পর পর দুইবার নিয়োগ দেয়ার পরেও প্রথমে থেকে কাজ করে নিয়োগ না পাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ন্যাশনাল ইনিষ্টিটিউট অব ল্যাবরেটরী মেডিসিন এন্ড রেফারেল সেন্টারের স্বেচ্ছাসেবী মেডিকেল টেকনোলজিষ্টরা। দ্রুত যেনো তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয় তারই দাবিতে নিজস্ব ভবনের নিচে অবস্থান ধর্মঘটে বসেন মেডিকেল টেকনোলজিষ্টরা।
আর্থিক সুবিধা পায়নি টেকনোলজিষ্টরা
কেনো এখনো তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা করা হলো না এ প্রশ্ন তুলে আন্দোলনকারীরা বলেন, যখন কেউ এগিয়ে আসসিলো না তখন আমরাই প্রথম এগিয়ে আসি। তারপর থেকে আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রেরিত নমূনা সমূহ, ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন সরকারী হাসপাতাল সমূহ (নিটোর, নিন্স, এসএসএমসিএস, নিও, এনএইচএফএইস ও কেএফ) সহ বিদেশগামীদের নমূনা সংগ্রহীত, ঢাকাস্থ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নমূনা সংগ্রহ এবং জাতীয় সংসদের সংগ্রহীত সকল নমূনা অদ্যাবধি পরীক্ষা করে আসছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন রকম আর্থিক সুযোগ সুবিধাও আমরা পাই নাই। পাশাপাশি দুই বারে ২৪০ জনের নিয়োগ দেয়া হলেও আমাদেরকে বঞ্চিত করা হলো।
দ্রুত নিয়োগের দাবি
আন্দোলনের সমন্বায়ক মিত্তনন্দ মন্ডল বলেন, ন্যাশনাল ইনিষ্টিটিউট অব ল্যাবরেটরী মেডিসিন এন্ড রেফারেল সেন্টারের প্রয়াত পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামছুজ্জামান তুষারের অনুরোধক্রমে আমরা ৫৫ জন স্বেচ্ছাসেবী মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট জীবনের মায়া ত্যাগ করে বিনা পারিশ্রমিকে ২০২০ সালের ৩১শে মার্চ হতে এই প্রতিষ্ঠানের কোভিড-১৯ এর পরীক্ষার কাজে সংযুক্ত হই। প্রায় আট লক্ষের অধিক টেস্ট আমরা করি। কিন্তু আমরা দেখতে পাই বার বার নিয়োগ কার্যক্রম চললেও আমাদের নিয়ে কোন ধরনের চিন্তা ভাবনা তাদের নেই। আমরা বার বার আন্দোলনে গেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও আমাদের পরিচালক এসে আশ্বাস দেয় যে আমাদের চাকরীর ব্যবস্থা করা হবে। তাদের আশ্বাসের পরেও চাকুরীর ক্ষেত্রে কোন রকম দৃশ্যমান অগ্রগতি আমাদের পরিলক্ষিত হয় নি। সে সেময় আন্দোলনকারীরা সরাসরি রাজস্ব খাতে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে।
দ্রুত নিয়োগের আশ্বাস
এই ৫৫ জন স্বেচ্ছাসেবী মেডিকেল টেকনোলজিষ্টদের ব্যাপারে এখনো কোন ব্যবস্থা নেওয়া হলোনা এটা কি এক ধরনের অবহেলা কিনা জানতে চাইলে ন্যাশনাল ইনিষ্টিটিউট অব ল্যাবরেটরী মেডিসিন এন্ড রেফারেল সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ডক্টর এসানুল হক বলেন, আমার কাছে মনে হয়না এটা অবহেলা। প্রথম থেকে কাজ গুলো হয়ে আসছিলো। এরপরে যখন ওদের রেগুলার নিয়ে নিয়োগের কথা আসতেছে, তারপরে কিন্তু তৎকালিন পরিচালকও একাধিকবার অনেকগুলো চিঠি পাঠিয়েছে। তার পরিপেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের থেকে আমাদেরকে বেশকিছু পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সে হিসেবে জিনিসটা এখনো পক্রিয়াধীন রয়েছে। আমরা মহাপরিচালক মহদোয়ের সাথে যোগাযোগ করেছি, আমরা আশাকরি খুব দ্রুত এর শুরাধা হবে।
মেডিকেল টেকনোলজিষ্টদের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, আমরা আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা করছি। আশাকরি খুব দ্রুত নিয়োগের সম্পূর্ণ হবে।