তাপপ্রবাহে জেনে নিন হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ১৬, ২০২৩, ০১:০৪ পিএম

তাপপ্রবাহে জেনে নিন হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো

গরমে বিরক্তি এত চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে যে প্রলাপ বকছেন? কথা বলার সময় জড়িয়ে যাচ্ছে? অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন বার বার? হতে পারে আপনি মনের অজান্তেই হিট স্ট্রোকের শিকার হয়েছেন।

হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো

প্রচণ্ড গরমের ফলে শরীরের অভ্যন্তরে হয়ে যাওয়া হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো হলো- তীব্র মাথাব্যথা, দ্রুত হৃদস্পন্দন, প্রচণ্ড তৃষ্ণা, পানিশূন্যতা, ঘাম, হাইপারভেন্টিলেশন, বমি ভাব, পেশিতে ব্যথা, বিরক্তি, বিভ্রান্তি বা প্রলাপ বকা, কথা জড়িয়ে যাওয়া, দুর্বলতা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, ঘাম না হওয়া ইতাদি।

এসব জানা থাকলে নিজে সচেতন থাকতে পারবেন পাশাপাশি অন্যদের দিকেও খেয়াল রাখতে পারবেন।

তীব্র মাথাব্যথা
প্রচণ্ড গরমে মানুষের মাইগ্রেনের ব্যথা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং তীব্র মাথাব্যথা হতে পারে। এটি হিট স্ট্রোকের একটি লক্ষণ হতে পারে।

দ্রুত হৃদস্পন্দন
হিট স্ট্রোকের পূর্বে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক দ্রুত হতে থাকবে। অনেকেই বলে থাকেন এ অবস্থায় বুক ধকধক করেছে।

প্রচণ্ড তৃষ্ণা, পানিশূন্যতা, ঘাম
হিট স্ট্রোকের আগে ব্যক্তি চরম তৃষ্ণা অনুভব করতে পারে, সেইসঙ্গে ডিহাইড্রেটেড এবং আড়ষ্টতা অনুভব করতে পারে। শরীর নিজেকে ঠান্ডা করার জন্য অতিরিক্ত ঘাম তৈরি করতে পারে।

হাইপারভেন্টিলেশন
শ্বাসকষ্ট হওয়া এবং দ্রুত ও ভারী শ্বাস-প্রশ্বাসও হিটস্ট্রোকের অন্যতম একটি লক্ষণ।

বমি ভাব
মাথাব্যথা, দ্রুত হৃদস্পন্দন ও হাইপারভেন্টিলেশন থেকে অক্সিজেনের অভাব ইত্যাদির কারণে হিট স্ট্রোকের আগে বমি বমি ভাব হতে পারে।

পেশিতে ব্যথা
সাধারণ ব্যথা ভেবে অনেকেই এই পেশি ব্যথাকে গুরুত্ব দেন না। হিট স্ট্রোকের আগে যেসব লক্ষণ দেখা যায়, তারমধ্যে অন্যতম একটি হলো পেশি ব্যথা।

বিরক্তি, বিভ্রান্তি বা প্রলাপ বকা
দাবদাহের ফলে সৃষ্ট অতিরিক্ত তাপের কারণে হিটস্ট্রোকের আগে মানুষ বিরক্ত বোধ করতে পারে। এছাড়াও হতে পারে রাগান্বিত। ভারসাম্যহীন ও অযৌক্তিক কথা বলতে পারে এবং এমনকি প্রলাপ বকতে পারে।

কথা জড়িয়ে যাওয়া
হিট স্ট্রোকের আরেকটি লক্ষণ কথা জড়িয়ে যাওয়া বা মাম্বলিং। ব্যক্তি অসংলগ্ন কথা বলা শুরু করতে পারে।

দুর্বলতা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
অতিরিক্ত উত্তাপে শরীরে আরও ক্লান্তি ও দুর্বলতা ভর করে। এতে করে আপনি অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন। এগুলো হিট স্ট্রোকের লক্ষণ।

ঘাম না হওয়া
হিট স্ট্রোকের একটি গুরুতর লক্ষণ হল দাবদাহের ফলে সৃষ্ট প্রচণ্ড গরমেও ঘাম না হওয়া। সাধারণত এর মানে হচ্ছে, শরীরে ঘাম হওয়ার মতো পানি আর নেই বা শরীরের প্রাকৃতিক শীতলকরণ প্রক্রিয়াটি কাজ করছে না।

এছাড়াও প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়। ত্বক শুষ্ক ও লালচে হয়ে যায় এবং শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়।

সতর্কতা

বর্তমানে দেশ জুড়ে চলছে তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই বাড়ির বাইরে কম-বেশি সবাইকেই বের হতে হয়। তবে হিটস্ট্রোক এড়াতে যতটা সম্ভব ছায়ার মধ্যে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। পানি ও পানি জাতীয় খাবারের মাধ্যমে হাইড্রেটেড থাকতে হবে। তবে কৃত্রিম চিনিযুক্ত পানীয় থেকে দূরে থাকবেন।

কিন্তু হিট স্ট্রোক যদি হয়েই যায়, তবে রোগীকে অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে, ঘরে চিকিৎসা করার কোনো সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে রোগীর আশপাশে যাঁরা থাকবেন তাঁদের করণীয় হলো—

* রোগীকে দ্রুত শীতল স্থানে নিয়ে গিয়ে কাপড় খুলে দিন।

* শরীর পানিতে ভিজিয়ে দিয়ে বাতাস করুন। কাঁধে, বগলে ও কুঁচকিতে বরফ দিন।

* রোগীর জ্ঞান থাকলে তাঁকে খাবার স্যালাইন দিন।

* দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।

Link copied!