বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগছে। এই সমস্যায় পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি ভুগে থাকেন। বিশেষ করে যে নারীদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে ঋতুস্রাবের সময় তাদের মাথাব্যথা আরও বেড়ে যায়।
মাইগ্রেনের মাথাব্যথা কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। সাথে বমি ভাবও যুক্ত হয়। মাথাব্যথা বেড়ে গেলে চোখে ঝাপসা দেখতে থাকেন অনেকে। অনেক সময় অতিরিক্ত হাই তোলা, কোনো কাজে মনোযোগ নষ্ট হওয়া, বিরক্তিবোধ করা ইত্যাদি উপসর্গও দেখা যায়। মাইগ্রেনের ব্যথা মাথার যেকোনো অংশ থেকে এ ব্যথা শুরু হয়ে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। চোখের পেছনে ব্যথার অনুভূতি হয়, শব্দ ও আলোতে মাথাব্যথা আরও বেড়ে যায়।
চকলেট, পনির, কফি ইত্যাদি বেশি খাওয়া, জন্মবিরতিকরণ ওষুধ, দুশ্চিন্তা, অতিরিক্ত ভ্রমণ, ব্যায়াম, অনিদ্রা, অনেকক্ষণ টিভি দেখা, দীর্ঘসময় কম্পিউটারে কাজ করা, মোবাইলে কথা বলা ইত্যাদির কারণে এ রোগ হতে পারে। মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, কোষ্ঠকাঠিন্য, অতি উজ্জ্বল আলো এই রোগকে বাড়িয়ে দেয়।
মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে খেতে পারেন যে খাবারগুলো-
* ঢেঁকি ছাঁটা চালের ভাত, আলু ও বার্লি মাইগ্রেন প্রতিরোধক খাবার। এগুলোতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
* খেজুর ও ডুমুর মাইগ্রেনের ব্যথা উপশম করে। বেশি করে ফল খাওয়া মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে উপকারী।
* সবুজ, হলুদ ও কমলা রঙের শাকসবজি নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করুন।
* ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। মাইগ্রেন প্রতিরোধ করতে তিল, আটা ও বিট খাবারে রাখতে পারেন।
* আদার টুকরো, রস বা আদার গুড়ো পানিতে মিশিয়ে দিনে দুবার খেতে পারেন।
মাথাব্যথা হলে অনেকেই চা-কফি খেয়ে থাকেন ব্যথা উপশমের জন্য। কিন্তু মাইগ্রেনের ব্যথা হলে চা-কফি আরও ক্ষতিকর। মাইগ্রেনের ব্যথায় যে খাবারগুলো এড়িয়ে যাওয়া ভালো-
* চা, কফি ও কোমলপানীয়, চকলেট, আইসক্রিম, দই, দুধ, মাখন, টমেটো ও টক জাতীয় ফল।
* পাউরুটি, রুটি, পাস্তার মতো গম জাতীয় খাবার
* আপেল, কলা ও চিনাবাদাম
* পেঁয়াজ
খাবারের পাশাপাশি কিছু সঠিক পদ্ধতি মেনে জীবনযাপন আপনার মাইগ্রেনের কষ্ট কমিয়ে দেবে-
* চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে হবে।
* প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ও পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।
* অতিরিক্ত বা কম আলোতে কাজ না করা।
* কড়া রোদ বা তীব্র ঠান্ডা পরিহার করতে হবে।
* উচ্চশব্দ ও কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে বেশিক্ষণ না থাকা।
* বেশি সময় ধরে কম্পিউটারের মনিটর ও টিভির সামনে না থাকা।
* মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। বিশ্রাম নিতে হবে। সুযোগ থাকলে কাপড় ভিজিয়ে মাথায় জড়িয়ে রাখতে হবে।
মাইগ্রেনের ব্যথার ভুক্তভোগীরা অবশ্যই শুরুতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন। নিজের শারীরিক সুস্থতার প্রয়োজনে সঠিক খাবার ও নিয়ম মেনে জীবনযাপন করুন।