অক্টোবর ২৫, ২০২২, ০৬:০৬ পিএম
যুক্তরাজ্যের ৫৭তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেলেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাজনীতিক ঋষি সুনাক। দেশটির গত ২০০ বছরের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হলেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে লিজ ট্রাসের স্থলাভিষিক্ত হলেন বরিস জনসন সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার বাকিংহাম প্যালেসে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে বৈঠক শেষে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ পান ঋষি সুনাক।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১১টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হতে বাকিংহাম প্যালেসে যান ঋষি সুনাক। সেখানে ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে বৈঠক করেন ঋষি সুনাক। বৈঠকে ব্রিটিশ রাজা চার্লস ঋষি সুনাককে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত রাজার কাছ থেকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ কনজারভেটিভ পার্টির এই নেতা।
১৯৮০ সালের ১২ মে ব্রিটেনের বন্দর সাউদাম্পটনে জন্ম হয় ঋষির। বাবা চিকিৎসক। জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার কর্মী। তাঁর মায়ের নিজস্ব ওষুধের দোকান ছিল। স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে বাবা-মা অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িত থাকলেও অক্সফোর্ড এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ঋষি কিন্তু সে সবের ধারেকাছেও যাননি। রাজনীতিতে নামার আগে তিনি ছিলেন পুরোদস্তুর এক জন বিনিয়োগ ব্যবসায়ী।
ব্রিটেনের অন্যতম বৃহৎ বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের তিনি ছিলেন এক জন সহপ্রতিষ্ঠাতা। ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালি থেকে বেঙ্গালুরু তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থা— সবেতেই ছিল তাঁর সংস্থার বিনিয়োগ।
ঋষি ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি বহুজাতিক সংস্থা ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণমূর্তির জামাই। ২০০৯ সালে ক্যালিফর্নিয়ায় তাঁর ভাবী স্ত্রী অক্ষতার নারায়ণমূর্তির সঙ্গে পরিচয় হয়। সে বছরই তাঁরা বিয়ে করেন।
ঋষি ও অক্ষতার দুই মেয়ে হয়। নাম, অনুষ্কা ও কৃষ্ণা। বিশ্বে অন্যতম ধনী দম্পতি। উভয়ের মিলিত সম্পত্তির পরিমাণ ৭৩ হাজার লক্ষ পাউন্ড।
২০১৫ সালে কনজারভেটিভের হয়ে ভোট দাঁড়িয়ে রিচমন্ড ইয়র্কশায়ার থেকে জিতে সাংসদ হন তিনি। তার পর আর তাঁকে ফিরে তাকাতে হয়নি। দলে ক্রমশই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন ঋষি। বরিসের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর একনিষ্ঠ সমর্থন ছিলেন তিনি। ফলে তাঁর মন্ত্রিসভা অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ঋষি।
প্রসঙ্গত, মাত্র ছয় সপ্তাহ আগে কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের দৌড়ে ঋষি সুনাককে হারিয়ে বরিস জনসনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন লিজ ট্রাস। তবে মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় গত বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। লিজ ট্রাসের বিদায়ের পর নতুন নেতা হওয়ার দৌড়ে যে কয়েকজনের নাম উচ্চারিত হচ্ছিল তাদের মধ্যে বরিস জনসনও ছিলেন। তবে নিজের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন ঋষি। আর শেষ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর দৌড় থেকে সরে দাঁড়ান কনজারভেটিভ পার্টির অপর প্রার্থী ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেনি মরডান্ট।