জুলাই ২, ২০২৩, ১১:৪২ এএম
পুলিশের গুলিতে ফ্রান্সে ১৭ বছরের কিশোর নাহেল এমের মৃত্যুর ঘটনায় শুরু হওয়া দাঙ্গা, সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা এখনো চলছে। মঙ্গলবার প্যারিসের শহরতলী নঁতেয়ায় পুলিশের একেবারে কাছ থেকে করা গুলিতে মৃত্যু হয় নাহেলের। এরপর থেকেই ফ্রান্সের বহু শহরে চলছে বিশৃঙ্খলা-দাঙ্গা-বিক্ষোভ।
এর মধ্যেই শনিবার সকালে প্যারিসের শহরতলীর এক মসজিদে নাহেলের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে স্থানীয় এক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
এতে বহু মানুষ অংশ নেয়। জানাজা ও দাফনকালে সংবাদমাধ্যম, ভিডিও করা বা ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল নাহেলের পরিবারের স্বজন ও অন্যরা। ‘স্ন্যাপচ্যাট বা ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করা যাবে না’ বলে দাফনে অংশ নেওয়া লোকজনকে আগেই বলে দেওয়া হয়েছিল।
বিক্ষোভের পঞ্চম রাতে হাজার হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকায় রাজধানী প্যারিসের কেন্দ্রস্থলে সহিংসতার তীব্রতা কম থাকলেও দেশটির বন্দর শহর মার্সেইতে দাঙ্গার মূল ঘটনাগুলো ঘটে।
বিক্ষোভের মাত্রা কম থাকলেও ১২৬ জনকে গ্রেপ্তার করে প্যারিসের পুলিশ। স্থানীয় সময় রাত ৯টা থেকে প্যারিস অঞ্চলে সব বাস ও ট্রাম চলাচল দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রাখা হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মার্সেইয়ে দাঙ্গাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহার করেছে। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ভিডিওগুলোতে এই দৃশ্য দেখা গেছে। সে সময় ৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ দিন ফ্রান্সজুড়ে প্রায় ৪৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন ছিল।
এদিকে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেগাল্ড দাগমানা এক টুইটে জানান, শনিবার রাতে বিভিন্ন শহর থেকে মোট ৪২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইন প্রয়োগকারীদের ‘দৃঢ় পদক্ষেপ’ এর কারণে রাতটি ‘শান্ত’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
এর আগে শুক্রবার রাতে ১৩০০ জনেরও বেশি এবং বৃহস্পতিবার রাতে ৯০০ জনেরও বেশি প্রতিবাদকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার মার্সেইতে পুলিশের সঙ্গে দাঙ্গাকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। অনলাইনে আসা বিভিন্ন ফুটেজে দেখা যায় নগরীর প্রাণকেন্দ্র লা ক্যানবিয়া অ্যাভিনিউতে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ এলাকায় দাঙ্গাকারীদের সঙ্গে পুলিশের এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সংঘর্ষ হয়।
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোন শৃঙ্খলা বজার রাখার প্রচেষ্টা দেখতে প্যারিসে জাতীয় পুলিশের কমান্ড রুমে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
লিলে, লিঁও, নিস ও স্তাসবুর্গে সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও আগের রাতগুলোর তুলনায় তীব্রতা কম ছিল। লিঁও থেকে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।