মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। স্থানীয় একটি পর্যবেক্ষক সংস্থার বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এএফপি।
মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্টেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) গণমাধ্যকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। সংস্থাটি জানায়, সেনা অভ্যুত্থানের পর শুরু হওয়া বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো হামলায় মোট ৫১০ জন প্রাণ হারিয়েছে। তবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা হয়তো আরও অনেক বেশি। এবং এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও সতর্ক করেছে এ সংস্থাটি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নেওয়ার পর শনিবার ছিল মিয়ানমারের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন। এদিন নিহতের সংখ্যা শেষ পর্যন্ত ১১৪ জনে দাঁড়িয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানায় আলজাজিরা।
জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর এ হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানিয়েছে।
মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস।
এদিকে রাস্তায় আবর্জনা ছুড়ে নতুন করে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেছে দেশটির সাধারণ মানুষজন। সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে মহাসড়ক ও গোল চত্বরগুলোতে ময়লা ফেলে রেখে আসছেন লোকজন।
গতকাল সোমবারও সামরিক বাহিনীর সহিংসতায় ১৪ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। এদের মধ্যে ৮ জন হলেন ইয়াঙ্গুনের সাউথ দাগোন এলাকার বাসিন্দা। বিক্ষোভকারীরা সেখানে বালুর বস্তার আড়ালে থাকলেও তাদের ওপর গোলার মতো বিশেষ ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়।
গণতন্ত্রপন্থী নেতা অং সান সু চি সামরিক বাহিনীর হাতে ক্ষমতাচ্যুত এবং বন্দি হওয়ার পর থেকে মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে জনগণ লাগাতার বিক্ষোভ করছে। বিক্ষোভ দমনে সহিংসতার পথ বেছে নেয় সামরিক সরকার।
নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তবে, দাবির পক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেনি তারা।
উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীরা সু চির মুক্তির পাশাপাশি বেসামরিক কর্তৃপক্ষের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।