যেমন ছিলো তৃতীয় দিনের রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২, ১০:০৮ পিএম

যেমন ছিলো তৃতীয় দিনের রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি

রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ কয়েকটি শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের সেনারা। বাসায় সম্ভব না হলে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বেসামরিক নাগরিকদের নির্দেশ দিয়েছে কিয়েভ।

বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে ইউক্রেনের বাসিন্দারা। ছবিটি কিয়েভ থেকে তোলা- 

কিয়েভের সিটি সেন্টারের একটি সামরিক ঘাটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই বাহিনীর মধ্যে তুমুল যুদ্ধের খবর পাওয়া গেছে। ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ইউক্রেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকার একটি আবাসিক বহুতল ভবন। উদ্ধারকাজ চালাতে দেখা গেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীদের।  

রাজধানী কিয়েভের কাছে রুশ ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বহুতল আবাসিক ভবন

আজভ সাগর থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরের মেলিটোপল শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে পুতিনের সৈন্যরা। পূর্বাঞ্চলীয় ডোনবাস শহরের রুশপন্থীরা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে এগিয়ে আছে বলে দাবি মস্কোর।

জীবন বাঁচাতে পোল্যান্ড, মালদোভা, হাঙ্গেরী, রোমানিয়াসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন ইউক্রেনের ১ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি নাগরিক। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে দীর্ঘ যানযটের সৃস্টি হয়েছে। আশ্রয়প্রার্থীদের সাহায্যে সীমান্ত এলাকায় জড়ো হয়েছেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীসহ স্বেচ্ছাসেবকরা।

১ লাখ ৫০ হাজার ইউক্রেনিয়ান নাগরিক এরইমধ্যে দেশ ছেড়েছেন

জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর আশংকা করেছে, পরিস্থিতি না বদলালে ইউক্রেনের শরনার্থীর সংখ্যা গিয়ে ঠেকবে ৪০ লাখে।

একসময়ের সোভিয়েত মিত্র ইউক্রেনের উপর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও ক্ষমতাধর রাশিয়ার এ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাপানের রাজধানী টোকিও, যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন, রাশিয়ার রাজধানী মস্কোসহ বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। রাশিয়ায় বিক্ষোভ থেকে প্রায় ২ হাজার বেসামরিক নাগরিককে আটক করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

বিভিন্ন দেশে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ

পশ্চিমারা ইউক্রেনকে সামরিক দিক দিয়ে কোন ধরণের সাহায্য করার সিদ্ধান্ত এখনো নেননি, তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করার ব্যাপারে একমত হয়েছে। আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবস্থা সুইফট থেকে রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার দাবিও জোরালো হয়েছে। প্রতিবাদ হিসেবে রাশিয়ার সাথে ফুটবল, টেনিসসহ আসন্ন বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে পোল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ। ইউক্রেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভিক্টর লিয়াশকো জানিয়েছেন, গত তিনদিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের ১৯৮ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কতজন সেনা সদস্য আর কতজন বেসামরিক নাগরিক তা নিশ্চিত করা যায়নি। রাশিয়া দাবি করেছে, শুধুমাত্র সামরিক ঘাটিগুলোতে লক্ষ্য করেই  হামলা চালানো হচ্ছে।

 

যদিও ইউক্রেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দাবি, ৩৩ শিশুসহ ১১শর বেশি ইউক্রেনের নাগরিক রুশ বাহিনীর গোলায় আহত হয়েছে। শনিবার ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে আনা নিন্দা প্রস্তাব স্থায়ী সদস্য দেশ রাশিয়ার ভেটোতেই ভেস্তে গেছে।

 

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে রাশিয়া ভেটো দেয়

গত ৩ দিনে ইউক্রেনের প্রায় ৮শ ২১ টি স্থাপনায় হামলা চালানোর দাবি করেছে রাশিয়া।  রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেজর জেনারেল আইজোর কোনাশেনকোভ বলেছেন, এসময় তারা ৮৭টি রুশ ট্যাংক ধ্বংস করে দিয়েছে।

যুদ্ধে সাড়ে ৩ হাজার রুশ সৈন্যকে হত্যার দাবি করছে ইউক্রেন। যদিও এ ব্যাপারে মস্কোর কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।    

Link copied!