মধ্য এশিয়ার বৃহত্তম দেশ কাজাখস্তানে গত সপ্তাহে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে সরকারবিরোধী গণবিক্ষোভ ও দাঙ্গায় ১৬০ জনের বেশি বিক্ষোভখারী নিহত হয়েছেন। এসময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে ৫ হাজারের বেশি লোক।
রবিবার (৯ জানুয়ারি) দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এরলান তুরগুমবায়েভ স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান,প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী এই মারাত্মক সহিংসতায় প্রায় ১৭৫ মিলিয়ন ইউরো (১৯৮ মিলিয়ন ডলার) মূল্যের সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১০০টিরও বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকে হামলা ও লুটপাট এবং প্রায় ৪০০ যানবাহন ধ্বংস করা হয়েছে।
রাশিয়ার স্পুটনিক সংবাদ সংস্থা রবিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, সহিংস ঘটনায় দুই শিশুসহ মোট ১৬৪ জন নিহত হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, কাজাখস্তানের প্রধান শহর আলমাটিতে ১০৩ জন মারা গেছে, যেখানে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা সংঘটিত হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এরলান তুর্গুম্বায়েভ বলেন, আজ(রবিবার) দেশের সব অঞ্চলে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দেশে শৃঙ্খলা পুনরায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১২৫টি পৃথক তদন্তের অংশ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মোট ৫,১৩৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
প্রায় দুই কোটি মানুষের জ্বালানি সমৃদ্ধ দেশটি এক সপ্তাহের সহিংসতায় কেঁপে ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভ ‘দেখা মাত্র গুলি’ করার আদেশ জারি করতে বাধ্য হন।
কাতারভিত্তিক আলজাজিরার খবরে বলা হয়, এক সপ্তাহ আগে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রাদেশিক এলাকায় জ্বালানির দাম বেৃদ্ধি করলে বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করে। দেশটির স্বাধীনতার ৩০ বছরের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা, যে ঘটনায় পুলিশ সরাসরি গুলি চালায়
টোকায়েভের আমন্ত্রণে রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত নিরাপত্তা চুক্তি সংস্থা (সিএসটিও) শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সৈন্য পাঠায়। ইউক্রেন সংকট নিয়ে রাশিয়া-মার্কিন উত্তেজনার মধ্যেই এমন ঘটনা ঘটলো বলে আল জাজিরার খবরে বলা হয়।