ছবি: সংগৃহীত
অন্য সব দেশের উপর বর্ধিত শুল্ক স্থগিত রাখলেও চীনের উপর তা বহাল রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও মার্কিন পণ্যের উপর বাড়তি শুল্ক বসিয়েছে। তার পরেই হোয়াইট হাউস জানায় চীনের উপর শুল্কের হার বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস ব্যাখ্যা দিয়ে জানিয়েছে, আগে চীনের অধিকাংশ পণ্যের উপর ২০ শতাংশ হারে শুল্ক চালু করা হয়েছিল। তার উপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। অর্থাৎ, এখন চীনা পণ্যের উপর মোট শুল্কের পরিমাণ ১৪৫ শতাংশ।
তবে চীনের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, মার্কিন শুল্ক নিয়ে চীন ভীত নয়।
চীনের প্রতিক্রিয়া
চীনের ওপর আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপের ঘটনাকে গুন্ডামি আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে লড়তে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
শুক্রবার সকালে বেইজিংয়ে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এ আহ্বান জানান।
এসময় শি জিনপিং বলেন, মার্কিন শুল্ক নিয়ে চীন ভীত নয়। চীন ও ইউরোপের উচিত তাদের আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালন করা এবং যৌথভাবে আমেরিকার একতরফা গুন্ডামি প্রতিরোধ করা।
বৈঠকে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য নিয়ে উত্তেজনার কারণে বেইজিং-ইইউর সহযোগিতা বাধাগ্রস্ত হওয়া উচিত নয়। স্পেন প্রতি বছর চীন থেকে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য ক্রয় করে।
এদিকে আলাদা এক বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেছেন, বাণিজ্য যুদ্ধে কেউ জয়ী হয় না। চীন এ ধরনের লড়াই চায় না। আর এ নিয়ে আমরা ভীত না।
ইইউ-র সিদ্ধান্ত নিয়ে ট্রাম্প
বৃহস্পতিবার ইইউ জানিয়েছে, মার্কিন শুল্কের পাল্টা হিসাবে তারা যে শুল্ক চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা স্থগিত থাকছে। ট্রাম্পের শুল্ক স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারাও আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের পথ খোলা রাখছে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেছেন, “আমরা আলোচনার সুযোগ দিতে চাই। যদি আলোচনায় ফল না হয়, তা হলে আমাদের পাল্টা ব্যবস্থার সিদ্ধান্তও নেয়া আছে।”
এরপর ট্রাম্প বলেছেন, “ইইউ খুব স্মার্ট। ওরা প্রত্যাঘাত করতে তৈরি ছিল। কিন্তু আমরা চীনের প্রতি কী ব্যবস্থা নিয়েছি তা শোনার পর ওরা বলছে, ওরা একটু পিছিয়ে যাচ্ছে।”
মার্কিন শেয়ার বাজারে প্রভাব
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প চীন ছাড়া বাকি দেশগুলির উপরে বাড়তি শুল্ক চালুর সিদ্ধান্ত ৯০ দিন স্থগিত রাখার পর শেয়ার বাজার চাঙ্গা হয়েছিল। কিন্তু দিনের শেষে মার্কিন শেয়ার বাজার পড়েছে। বিশ্বজুড়ে মন্দা ও বাণিজ্য যুদ্ধের সম্ভাবনায় এটা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এসঅ্যান্ডপি ৫০০ প্রথমে সাড়ে নয় শতাংশ উঠলেও বাজার বন্ধ হওয়ার সময় সাড়ে তিন শতাংশ পড়ে যায়। অশোধিত তেলের দামও কমেছে। ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারের দাম দুই শতাংশ কমেছে।