ছবি: সংগৃহীত
প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বর্তমানে বাজেটের সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের বাজেটের ‘মিল পাচ্ছেন’ তিনি।
মঙ্গলবার, ০৩ জুন সকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাঁতী দলের অনুষ্ঠানে রিজভী বলেন, “এই বাজেটে শেখ হাসিনার সঙ্গে পার্থক্য কী বলুন? শেখ হাসিনা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল আপনারাও দিয়েছেন। এটা তো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, এটা ডক্টর ইউনূস সাহেবের সরকার, মানুষ জানে সৎ সরকার। এই সরকারের হাত দিয়ে কেন খারাপ কাজ হবে এটা মানুষ জানতে চায়।”
তিনি বলেন, “এখন দেখছি, উনার (মুহাম্মদ ইউনূস) হাতে দিয়ে ওই সমস্ত লুটেরা, ব্যাংক ডাকাতরা, তাদের কাছে তো কালো টাকা, তারা যদি কালো টাকা সাদা করতে পারে তাহলে স্বাস্থ্য সেক্টর, শিক্ষা সেক্টর, অন্যান্য সেক্টর যদি বঞ্চিত হয়…। ওইসব খাতে যদি বরাদ্দ না থাকে, সামাজিক সুরক্ষা খাতে যদি বরাদ্দ কম থাকে, তাহলে মানুষের কল্যাণের কী হবে?”
সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকার বাজেট উত্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। সেখানে অপ্রদর্শিত অর্থ আবাসন খাতে বিনিয়োগ করে বৈধ করার সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে সেজন্য এখনকার তুলনায় বেশি কর দিতে হবে। এ বিষয়টিকে ‘বৈষম্যমূলক’ বলছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, “৭ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেটের ২৩ শতাংশের উপরে যাবে শুধু প্রশাসনের বেতনের জন্যে। তাহলে গরিব মানুষের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থায় আপনি কী রেখেছেন?
“সব টাকা, লাভের গুড় তো পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলছে তাহলে জনগণের জন্য কী করলেন? স্বাস্থ্য খাতে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কম। আমার দরকার তো শিক্ষা খাতে, আমার বরাদ্দ তো স্বাস্থ্য খাতে। মানুষের ন্যূনতম স্বাস্থ্য সেবা এটা রাষ্ট্র দেখবে।”
তিনি বলেন, “ইউনূস সাহেব পৃথিবীব্যাপী অনেক কথা বলেছেন। আজকে যখন তার হাতে ক্ষমতা, তিনি তো গরীব মানুষকে ভালো রাখবেন। তিনি একসময় বলেছেন, ‘ক্ষুধাকে দারিদ্রকে জাদুঘরে করে পাঠান’। ডক্টর ইউনুস সাহেবের কথা। এখন দেখছি, উনার হাতে দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
“দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল ডক্টর ইউনুসকে সমর্থন দিয়েছে যে আপনি দেশ ভালো চালান। তার হাতে যে বাজেট, সে বাজেট কেন গরীবকে আরও গরীব করা এবং মুদ্রাস্ফীতি কমানোর জন্য যে পদক্ষেপ, সেটা তো বাজেটে আমরা দেখতে পাচ্ছি না। বরং মধ্যবর্তী ও নিম্ন মধ্যবর্তী, নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর চাপ আরো বাড়বে। এটা অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এটা আমার কথা নয়।”
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নয়া পল্টনে দুঃস্থদের জন্য খাবার বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাজেট নিয়ে কথা বলেন রিজভী।
তাঁতী দলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।