ছবি: সংগৃহীত
কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের ভয়াবহ হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে বেশ কয়েক দিন ধরে দুই দেশই নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর একে অপরের বিরুদ্ধে বিনা উসকানিতে গুলিবর্ষণের অভিযোগ তুলেছে।
গতকাল রোববার দিবাগত রাতেও দুই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি ঘটনা ঘটেছে।
পাকিস্তানের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, দেশটির বিভিন্ন সেনাচৌকি লক্ষ্য করে বিনা উসকানিতে গুলি চালিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এর উপযুক্ত জবাব দিয়েছে বলেও জানিয়েছে সূত্রটি।
পাকিস্তানি সূত্র আরও জানায়, নিয়ন্ত্রণরেখার পার্নিকিয়াল, খই রাট্টা, শারদা, খেল, নীলম ও হাজি পীর সেক্টরে ভারতীয় সেনারা কোনো রকম উসকানি ছাড়াই গুলি চালিয়েছে।
অন্যদিকে আজ সোমবার ভারতীয় সেনাবাহিনী বলেছে, জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর একাধিক স্থানে ছোট অস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।
দ্য হিন্দুর এক খবরে বলা হয়েছে, পেহেলগাম হামলার পর সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে। মস্কোয় নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সহায়তা চেয়েছেন। গত শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি ও ১৯৯৯ সালের লাহোর ঘোষণার আলোকে দ্বিপক্ষীয় উপায়ে বিরোধ নিরসনের আহ্বান জানান। তিনি পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন। এ সময় ইসহাক দার ভারতের ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ ও উসকানিমূলক বক্তব্য’ প্রত্যাখ্যান করেন।
ভারত অভিযোগ করেছে, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর টানা ১১ দিনের মতো পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী বিনা উসকানিতে গুলিবর্ষণ করেছে। ৪ ও ৫ মে গভীর রাতে কুপওয়ারা, বারমুল্লা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধার, নওশেরা, সুন্দারবনি এবং অখনুর এলাকার বিপরীত পাশে পাকিস্তানি সেনাচৌকি থেকে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, তারা সঙ্গে সঙ্গেই ওই গুলির জবাব দিয়েছে।
পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের প্রাণঘাতী হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছে নয়াদিল্লি। তবে এ অভিযোগ নাকচ করে আসছে পাকিস্তান। ওই হামলার পর থেকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রতিবেশীর মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়।