মরক্কোয় ভয়াবহ ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত আড়াই হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পর্যটন নগরী মারাকেশসহ অনেক এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এখনো উদ্ধারকাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না বলে উদ্ধারকাজ এগোচ্ছে না বলে অভিযোগ আসছে।
সোমবার মরক্কোর রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার খবরে ২ হাজার ৮৬২ জনের নিহত ও ২ হাজার ৫৬২ জনের আহত হওয়ার কথা জানানো হয়।
এখনো হাজারো মানুষ গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন পাড় করছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্ধারকাজের পাশাপাশি ত্রাণসামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে খাবার, তাঁবু, চাদর, সুপেয় পানি বিতরণ করা হচ্ছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা যায়, ভূমিকম্পের আঘাতে টিনমেল গ্রামে প্রায় প্রতিটি ঘর ধূলিসাৎ হয়ে গেছে এবং গ্রামবাসীদের সবাই গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা অসংখ্য মৃত পশুর দুর্গন্ধ চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে।
তাফেগাঘতে গ্রামে ধ্বংসাবশেষ দেখে বোঝা যায়, কেন এখানে কেউই অক্ষত থাকতে পারেনি। গ্রামের বাসিন্দাদের ঐতিহ্যবাহী ঘরবাড়িগুলো ইট ও পাথর দিয়ে এমনভাবে তৈরি যে এগুলো শক্তিশালী মাত্রার ভূমিকম্পে টিকে থাকার উপযোগী নয়। গ্রামটির ২০০ বাসিন্দার মধ্যে ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও অনেকে নিখোঁজ।
এদিকে ভূমিকম্পের পর রাজা চতুর্থ মোহাম্মদ কিংবা মরক্কোর প্রধানমন্ত্রী আজিজ আখানুচ-কেউ জাতির উদ্দেশ্যে কোনো ভাষণ না দেয়ায় সবাই হতাশা প্রকাশ করছেন।
এদিকে সবার কাছ থেকে সাহায্য নিচ্ছে না মরক্কো। তবে স্পেন, কাতার, যুক্তরাজ্য ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছ থেকে ত্রাণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। এর মধ্যে কাতার, স্পেন ও যুক্তরাজ্য সেখানে উদ্ধারকর্মী ও বিশেষজ্ঞ পাঠিয়েছে।
এছাড়া প্রাথমিকভাবে ১০ লাখ মার্কিন ডলারের সাহায্য তহবিল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে এই অর্থ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
আবার ত্রাণ সাহায্য করতে চেয়েও কোনো ইতিবাচক সাড়া পায়নি জার্মানি ও ফ্রান্স। ফলে উদ্ধারকাজে দেশ দুটি কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১১ মিনিটে মরক্কোর মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মারাক্কেশ শহর থেকে ৭১ কিলোমিটার দূরে এটলাস পর্বতমালা এলাকার ১৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পে অসংখ্য বাড়িঘর ধসে পড়ে, অনেক ভবনের দেয়াল ফেটে যায় এবং বহু মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন।